বৃষ্টির মধ্যেও কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে পর্যটকদের ভিড়

কিশোরগঞ্জের নিকলী বেড়িবাঁধে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা হাজারো পর্যটক। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতেও থেমে নেই তাদের আগমন। বিশাল জলরাশি ও হাওরের দিগন্ত ছোঁয়া অপরূপ দৃশ্যে মুগ্ধ পর্যটকরা।

শুক্রবার (২১ জুন) দুপুর থেকে নিকলীর বেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে পর্যটকদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে মানুষ ঈদের ছুটিতে এখানে বেড়াতে আসছেন। পর্যটকদের আগমনে উপজেলার কয়েক হাজার মাঝিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটছে।

জানা যায়, কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলের মধ্যে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে নিকলী বেড়িবাঁধ। ইদ পরবর্তী সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত বা ছুটি কাটাতে কিশোরগঞ্জের এ বেড়িবাঁধ এলাকায় ঘুরতে আসেন হাজার হাজার মানুষ। ২০০০ সালের দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলা সদরকে বর্ষায় ভাঙনের কবল থেকে রক্ষায় সরকার সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। এছাড়া উপজেলার ছাতিরচর গ্রামের ভাঙনরোধে রোপণ করা হয় হাজারো করচগাছ। হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সারাদেশের মানুষ বর্ষা মৌসুমে ছুটে আসে নিকলী হাওরে। তাই নিকলীকে হাওর পর্যটনকেন্দ্র বলা হয়ে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যেই পর্যটকরা ভিজতে ভিজতে বেড়িবাঁধের রাস্তায় ও নৌকায় ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। প্রতি বছর ঈদের ছুটি ও বর্ষাতে নিকলী বেড়িবাঁধে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। এতে স্থানীয় নৌকার মাঝি ও হোটেল-রেস্তুারার মালিকদের ব্যবসাও ভালো হয়।

বর্ষাকালে ট্রলারের মাধ্যমে পর্যটকদের হাওরে ঘুরিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন সিদ্দিক মিয়া। তিনি বলেন, সারা বছরই আমরা এই বর্ষার অপেক্ষায় থাকি। এসময় হাওরে পর্যটকদের আগমন ঘটে। তাদেরকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে হাওরের কয়েক হাজার মাঝি ও মালিকের জীবিকার ব্যবস্থা হয়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে হাওরের পানি আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করেছে। ঈদের ছুটি থাকায় হাওরে পর্যটকও আসছে। আশা করছি পর্যটক সংখ্যা আরও বাড়বে।

আখাউড়া থেকে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আসা ফাহিম আহমেদ হিমেল বলেন, আজকে ১০টি বাইকে ২০জন বন্ধু নিকলী বেড়িবাঁধে ঘুরতে এসেছি। হাওরে মাত্র নতুন পানি এসেছে। ট্রলারে করে হাওরে ঘুরলাম। অনেক আনন্দ পেয়েছি। পরিবেশটাও বেশ ভালো লেগেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই ঈদের দিন থেকে কয়েক হাজার পর্যটক নিকলী বেড়িবাঁধ সংলগ্ন হাওরে ঘুরতে এসেছেন। তাদের আগমনে আমরা খুবই আনন্দিত। উপজেলার প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ বর্ষা মৌসুমে পর্যটন কেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। পর্যটকদের জন্য যেন হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে সেদিকে স্থানীয় সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসন সজাগ দৃষ্টি রাখেন।

নিকলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ঈদের পর থেকে নিকলীতে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। বেড়িবাঁধে আসার আগে দুটি স্থানে চেকপোস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেড়িবাঁধ এলাকায় সিভিল এবং পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিচ্ছেন। নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ভ্রমণের জন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ধরনের সুবিধা পুলিশের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের দেওয়া হচ্ছে।

 

 



শাকিল/সাএ