পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নবান্নে, ব্রাত্য থাকল তাহেরপুর–ঝালদা‌

লোকসভা নির্বাচনে মানুষের রায়ে সাফল্য ঘরে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের। কিন্তু এই সাফল্যের পিছনে একটু চিন্তাও যোগ হয়েছে। সেটা হল—শহরের মানুষজনের দেওয়া ভোটের পরিসংখ্যানে বিজেপির ভোট বেড়েছে। কলকাতা পুরসভার মতো জায়গায় ৪২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে আছে তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ড। আবার একাধিক জেলার পুরসভা এলাকায় একই পরিসংখ্যান মিলছে। এই আবহে এবার আগামী পরশু, সোমবার নবান্নে রাজ্যের একাধিক পুরসভার চেয়ারম্যান ও পুরসভার অফিসারদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং সব জেলার জেলাশাসকরা।

এখানে একটা বিষয় বলা দরকার, তৃণমূল কংগ্রেস ৪২টি ওয়ার্ডে এগিয়েছে আছে। আর অধিকাংশ ওয়ার্ডে জিতেছে। বাকি একটা বড় অংশের ওয়ার্ডে এগিয়ে আছে বিজেপি। এটাই চিন্তা বাড়িয়েছে। যেখানে শহরে কখনই বিশেষ দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। আসন সংখ্যা এবারের লোকসভা নির্বাচনে কমলেও অনেক জায়গায় ভোট বেড়েছে। তাও আবার শহরে। এটা নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেছেন, যাঁরা শহরের ফ্ল্যাটে থাকেন তাঁদের একটা বড় অংশ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেয়নি। তবে গ্রামবাংলার মানুষের ভোট তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে। এমনকী সংখ্যালঘু ভাই–বোনেরাও ঢেলে তৃণমূল কংগ্রেসকে আশীর্বাদ করেছেন। তাই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।

আরও পড়ুন:‌ কংগ্রেসে ফিরতে চলেছেন প্রণব–পুত্র অভিজিৎ, ছেড়ে দিচ্ছেন তৃণমূল, তোলপাড় রাজধানী

এবার নবান্নের এই প্রশাসনিক স্তরের বৈঠকে একটা নতুন তথ্য উঠে আসছে। সূত্রের খবর, সোমবারের ওই প্রশাসনিক বৈঠকে ডাক পায়নি তাহেরপুর এবং ঝালদা পুরসভা। বাংলার এই দু’টি পুরসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের বোর্ড নেই। তাহেরপুর পুরসভা বামেদের। আর ঝালদা পুরসভা কংগ্রেসের। কেন এই দুটি পুরসভা বাদ গেল?‌ উঠছে প্রশ্ন। বিরোধী বোর্ড বলেই কি ব্রাত্য তাহেরপুর–ঝালদা?‌ এই প্রশ্নও চর্চিত হচ্ছে নানা মহলে। সোমবার পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে যে প্রশাসনিক বৈঠক হবে সেখানে সরকারি পরিষেবা প্রদানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।

এবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। বিজেপি পেয়েছে ১২ আসন। কংগ্রেস ১টি এবং বামেরা শূন্য। কিন্তু আসন সংখ্যা বাড়লেও পুরসভা এলাকা এবং শহরের এলাকাগুলিতে ভোট কমল কেন?‌ তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। পরিষেবার দিক থেকে কোনও ঘাটতি ছিল কিনা সেটাও জানতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই প্রশাসনিক বৈঠকে বাদ পড়েছে তাহেরপুর–ঝালদা। এই বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‌এই যে বৈঠক ডাকা হয়েছে, তাতে তাহেরপুর, ঝালদাকে ডাকা হয়নি। এগুলি কি পুরসভা নয়? একটিই পুরসভা যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস জিততে পারেনি। সেটা হচ্ছে তাহেরপুর। সেখানে ওসি বদলেও সমস্যার সমাধান করতে পারছে না।’‌