বাংলাকে অন্ধকারে রেখেই ফরাক্কা–গঙ্গা চুক্তি নবীকরণ সম্পন্ন, সংসদে গর্জন করবে তৃণমূল

দু’‌দিনের সফরে ভারতে এসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। মোদী–হাসিনার বৈঠকে ফরাক্কা চুক্তির মেয়াদের নবীকরণ করা হয়েছে। ফলে বাংলায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়ল বলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই ১০টি মউ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে ভারত–বাংলাদেশের মধ্যে। ফরাক্কা–গঙ্গা চুক্তি সম্পন্ন করার পথে এগিয়েছে এনডিএ সরকার। আর এখানেই আপত্তি বাংলার। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই নতুন করে ফরাক্কা–গঙ্গা চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ তুলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

এদিকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ, শনিবার নয়াদিল্লিতে মোদী–হাসিনার বৈঠকে আবার ফরাক্কা–গঙ্গা চুক্তি নবীকরণ করা হয়েছে। তা নিয়ে বাংলার সরকারকে কিছু জানানোই হয়নি। এই চুক্তি নিয়ে বাংলাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সেখানে তার আগেই তড়িঘড়ি এই চুক্তি কেমন করে হল?‌ উঠছে প্রশ্ন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি, এই চুক্তি আবার বাস্তবায়িত হলে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় বন্যা এবং ভাঙ্গন দেখা দেবে। তাতে বাংলার বিপুল পরিমাণ গ্রামের মানুষ বিপদের মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌সার্কাস চলছে, সেটা উপভোগ করছি’‌, বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্বকে নিয়ে বিস্ফোরক পোস্ট অনুপমের

অন্যদিকে আগে যে চুক্তি হয়েছিল তার জন্য রাজ্যকে টাকা দেয়নি কেন্দ্র। গঙ্গা ড্রেজিং এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর এটাই বন্যা ও গঙ্গা ভাঙনের অন্যতম কারণ বলে দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীকে একাধিকবার চিঠি লিখেছেন। কিন্তু এই একতরফা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সংসদে তীব্র প্রতিবাদ করবে তৃণমূল কংগ্রেস বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখেই মোদী–হাসিনার বৈঠকে নতুন করে ফরাক্কা–গঙ্গা চুক্তি সম্পন্ন করার পদক্ষেপ করা হয়েছে।

এছাড়া আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, এই ভাঙনের কারণ ফরাক্কা ব্যারাজ। তাই বাংলার বিপুল সম্পদ, কৃষি জমি এবং আমবাঙালির ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে যে রাজ্যের ভূখণ্ড অথবা নদীর জলবন্টন নিয়ে চুক্তি হবে, সেই রাজ্যের মতামতকে বিবেচনা করতে হবে। আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তির জেরে নয়াদিল্লি এবং ঢাকা সহমত হলেও তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১৭ সালে ফরাক্কা ব্যারেজের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সরব হয়েছিলেন। এখন তিনি এনডিএ সরকারের জোটে আছেন। এসবের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। ভারতকে ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।