স্কুলের পানীয় জলে মদের গন্ধ, ট্যাঙ্ক খুলতে মিলল বোতল, আরামবাগে তোলপাড় কাণ্ড

স্কুলের পানীয় জল পান করতে গিয়ে কেমন তেতো গন্ধ পায় পড়ুয়ারা। সে কথা তারা শিক্ষকদের জানায়। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছিলেন না শিক্ষকরা। কিন্তু একটা খটকা লেগেই ছিল। তাই শিক্ষকরা বারবার এই অভিযোগ শুনে নিজেরাই সেই জল পান করেন। তখনই বুঝতে পারেন ছাত্ররা সঠিক কথাই বলেছিল। কিন্তু ছাত্রদের যা তেতো লেগেছে সেটা আসলে মদ। জলের সঙ্গে মদ কেমন করে যোগ হচ্ছে। এটা নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতেই বেরিয়ে এল ট্যাঙ্কের ভিতরে মদের বোতল! এই ঘটনায় এখন রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে আরামবাগে।

আরামবাগের মুথাডাঙা চক্রের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পানীয় জলে মদের গন্ধ মেলায় সেটাই এলাকায় চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। ছাত্রদের মুখে শনিবার পানীয় জলে খারাপ গন্ধের কথা শুনে খটকা লেগেছিল শিক্ষকদের। কিন্তু আড়ালে যে এমন ঘটনা রয়েছে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। নিজেরা সেই জল পান করতেই গোটা ঘটনাটি সামনে আসে। শিক্ষকরাও মদের গন্ধ পান। তখন ওই একতলা স্কুলভবনের ছাদের ট্যাঙ্কের ঢাকনা খোলা হয়। আর তা খুলতেই সেখান থেকে অর্ধেক মদ ভর্তি ছিপিআঁটা বোতল উদ্ধার করেন। এরপর স্কুলে মিড–ডে মিল বন্ধ থাকে।

আরও পড়ুন:‌ মেধাবী জঙ্গি হাবিবুল্লার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত, টেলিগ্রাম অ্যাপে চলত কার্যকলাপ

এই ঘটনার নেপথ্যে নিশ্চয়ই কারও হাত আছে বলে মনে করেন শিক্ষকরা। স্কুলের ট্যাঙ্কের জলে কেউ মদ মিশিয়ে দিয়েছে। আর ট্যাঙ্কের ভিতর মদের বোতল রেখে দেওয়া হয়েছিল। যাতে কেউ সন্দেহ না করে। কিন্তু সেখান থেকে লিক করেই মদ মিশেছে পানীয় জলে। যা পাল করেছে পড়ুয়ারা। এই বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‌স্কুলের গ্রাম শিক্ষা কমিটি, অভিভাবকদের এবং স্কুল পরিদর্শককে এই কথা জানানো হয়েছে। তাই মিড–ডে মিল রান্না বন্ধ রাখা হয়।’‌ পুলিশের কাছেও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।

এই স্কুলের কোনও প্রাচীর নেই। পড়ুয়ার সংখ্যা সেখানে ৯১ জন। চারজন শিক্ষক এবং একজন পার্শ্বশিক্ষক এই স্কুলে আছেন। এখানেই ছাত্ররা জল পান করতে গিয়ে অন্যরকম গন্ধ পায়। সে কথাই শিক্ষকদের তারা বলেছিল। মুথাডাঙা চক্রের স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) বিশ্বজিৎ গনাইয়ের বক্তব্য, ‘শুক্রবার রাতে স্কুলের জলের ট্যাঙ্কে কেউ মদের বোতল রেখে দেয়। সেই বোতলটি উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেটা নিয়ে আজ সোমবার অভিভাবক এবং গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হবে স্কুল কর্তৃপক্ষের।’‌ তবে গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতি জয়ন্তী প্রতিহারের কথায়, ‘‌স্কুলের প্রাচীর নির্মাণের জন্য তহবিলের আবেদন করা আছে। এই সব অন্যায় রুখতে গ্রামবাসীদের সহযোগিতা দরকার।’‌