প্রশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘‌প্রেসিং ফুটবল’‌ শুরু, নবান্ন থেকে জোর খেলা কি হবে?‌

স্পেন সফরে গিয়েছিলেন একবছর আগে। তখন বাংলায় ফুটবল অ্যাকাডেমি করার জন্য ‘লা লিগা’র প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন ইউরো কাপে যখন স্পেন সবচেয়ে বেশি ‘প্রেসিং ফুটবল’ খেলছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্য প্রশাসনে ‘প্রেসিং ফুটবল’ শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন আমলা থেকে শুরু করে দফতরের মন্ত্রীরা। একের পর এক ম্যারাথন বৈঠক এবং সমস্ত কিছুর হাল–হকিকত সরেজমিনে জেনে নেওয়া কম বড় ব্যাপার নয়। তাঁর নখদর্পণে যে সবটাই আছে সেটাও বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।

আর দু’‌বছর পর রাজ্যে হবে বিধানসভা নির্বাচন। তার প্রস্তুতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন থেকেই সেরে রাখতে চান। এখন বাংলায় প্রধান বিরোধী দল নিজেদের মধ্যে কোন্দলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। লোকসভা নির্বাচনে এমন ভরাডুবির নেপথ্যে ‘‌আসল অপরাধী’‌ কে?‌ সেটা খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বিজেপি নেতারা। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের পায়ে বল ধরে সামনে এগোতে শুরু করেছেন। আজ, সোমবার রাজ্যের সমস্ত পুরসভার মেয়র এবং চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠকে করতে চলেছেন তিনি। আর তারপর মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন তিনি। এই ম্যারাথন বৈঠক প্রশাসনিক পর্যায়ে করে যাওয়াকেই ‘‌প্রেসিং ফুটবল’‌ বলা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:‌ ‘ইঁদুরের কাণ্ড’ থেকে আগুন লাগে হলং বাংলোয়!‌ শর্টসার্কিট নিয়ে জমা পড়ল রিপোর্ট

ইতিমধ্যেই কদিন আগে নবান্নে রাজ্যের সমস্ত মন্ত্রী, সচিব, পুলিশকর্তা, জেলাশাসককে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বৃহস্পতিবার পুরনিগমগুলির মেয়র, নানা দফতরের অফিসার ও পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ তিনি বৈঠক করবেন রাজ্যের সমস্ত পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে। এক সপ্তাহের মধ্যে দফায় দফায় এমন তিন বৈঠক সকলকে চাপে ফেলে দিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, রাজ্যের ৯২টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে আছে বিজেপি। সেখানে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যেতে হবে ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে সঙ্গে নিয়ে। তাই উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শহরাঞ্চলের ভোট কম আসাতেই বাড়তি চিন্তা তৈরি হয়েছে। গ্রামবাংলার ভোটে তেমন দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। কিন্তু শহরের আসন তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এলেও ভোট কমে গিয়েছে। তাই এখন থেকেই রিপু করা প্রয়োজন। এই বছরের ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে আবাস যোজনার টাকা উপভোক্তাদের দেওয়ার কথা। সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। তালিকায় যেন কোনও গড়মিল না থাকে তার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিজেপির কোন্দল পরিস্থিতি অব্যাহত। সিপিএম দিশাহীন। কংগ্রেস কোণঠাসা। এই অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেস গর্ত বুজাতে চাইছে। এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‌তৃণমূল কংগ্রেস মানে অবিরাম শুদ্ধিকরণ। তাই জয়ে আমাদের মাথা ঘুরে যায় না। আমরা দেখি কোথায় খামতি। সেটা মেটাই।’‌ এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘‌প্রেসিং ফুটবল’‌ শুরু করেছেন তাতে খেলা হবেই।