শেষ মিনিটের গোলে ক্রোয়েশিয়াকে কাঁদিয়ে শেষ ষোলোতে ইতালি

রেফারি ম্যাচ শেষ করার বাঁশি বাজানোর অপেক্ষায়। আট মিনিটের ইনজুরি টাইম শেষ হতে আর ৩০ সেকেন্ডের মতো বাকি। ইতালি শেষবারের মতো আক্রমণ চালালো। ক্রোয়েশিয়া সম্ভবত বুঝে উঠতে পারেনি কী হতে চলেছে। রিকার্ডো কালাফিওরিকে থামাতে পেছনে ছুটেছেন তাদের চার খেলোয়াড়। সামনে ছিলেন জসকো জিভারদিওল। তার চ্যালেঞ্জের মুখে একেবারে শেষ মুহূর্তে বাঁ দিকে বল বাড়ালেন কালাফিওরি। বদলি নামা মাত্তিয়া জাক্কাগনি প্রথমবার শট নিলেন লক্ষ্যে, বল ভেসে বাঁক খেয়ে জালে জড়ালো। এ যেন অবিশ্বাস্য এক প্রত্যাবর্তনের গল্প। শেষ ষোলোতে উঠতে ইতালির হার এড়ালেই হতো। ক্রোয়েশিয়ার জয় ছিনিয়ে নিয়ে তারা করলো ১-১ গোলের ড্র। চমক দেখিয়ে পেয়ে গেলো নকআউটের টিকিট।

ইতালি ও ক্রোয়েশিয়ার লড়াই মানে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। পরিসংখ্যান বলে সেই কথা। ৯ বারের দেখায় পাঁচ ম্যাচই হয়েছিল ড্র। আগের তিন ম্যাচের প্রত্যেকটি হয়েছে ১-১ গোলের ড্র। এবারও একই ফল হলো। এক গোলে পিছিয়ে থাকা ইতালি শেষ বাঁশি বাজার ৩০ সেকেন্ড আগে গোল শোধ দিয়ে দিলো।

লাইপজিগে প্রথমার্ধে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে ইতালি। মাতেও রেতেগুই কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিনবার গোলের জন্য শট নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলপোস্টের দিকে বল মারতে পারেননি একবারও। 

ইতালি সুবর্ণ সুযোগ পায় ২৭ মিনিটে। ক্রোট গোলকিপার ডোমিনিক লিভাকোভিচ ক্ষিপ্রতা না দেখালে এগিয়ে যেতো আজ্জুরিরা। কর্নার থেকে বারেল্লার ক্রসে আলেজান্দ্রো বাস্তোনির শক্তিশালী হেড দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন লিভাকোভিচ। ১০ মিনিট পর পেল্লেগ্রিনির বাঁ দিকে শট নেন। আবারও ক্রোট গোলকিপার বাধা হয়ে দাঁড়ান। 

গোলশূন্য থেকে হাফটাইমে যায় দুই দল। বিরতি থেকে ফিরে সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না কেউ। ৫২ মিনিটে ক্রামারিচের শটে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ইতালির ফ্রাত্তেসির বাঁহাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় ক্রোয়েশিয়া।

মদরিচ স্পট কিক থেকে শট নেন। তার ডানপায়ের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বল হাতে রাখতে পারেননি ইতালি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা। বল পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। সতীর্থের ক্রসে আন্তে বুদিমির শট নিলেও ইতালি গোলকিপার ফিরিয়ে দেন, ক্ষিপ্রতার সঙ্গে মদরিচ বাঁ দিকে দৌড়ে গিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে জাল কাঁপান। 

গোল করেও বেদনায় সিক্ত মদরিচ

৩৮ বছর ও ২৮৯ দিন বয়সী মদরিচ ইউরোর সবচেয়ে বয়স্ক গোলদাতার মর্যাদা আদায় করেন, পেছনে ফেলেন পোল্যান্ডের ইভিকা ভাসতিচকে। এটি মদরিচের পঞ্চম ইউরো এবং ১৭৮তম ম্যাচ খেলতে নেমে ২৬তম গোল করলেন।

মদরিচের ওই গোল গড়ে দিতে পারতো পার্থক্য। কিন্তু নাটকীয়ভাবে শেষ হলো ম্যাচ। ৮১ মিনিটে বদলি নামা জাক্কাগনির গোলে ক্রোয়েশিয়ার জয় ছিনিয়ে নিলো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালি, স্পেনের সঙ্গে জায়গা পেলো শেষ ষোলোতে। ‘বি’ গ্রুপের খেলায় তিন ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট চার। দুই পয়েন্ট নিয়ে তিনে ক্রোয়েশিয়া। তাদের নকআউটের আশা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। গ্রুপের সেরা চার তৃতীয় দলের একটি হয়ে তারা শেষ ষোলোর টিকিট পেলেও পেতে পারে।