সাংবাদিক রিজুর উপর হামলার প্রতিবাদে কুষ্টিয়া উত্তাল

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার আয়োজনে বেলা ১১টায় এশিয়ান টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রিজুর উপর হামলার ঘটনায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত  হয়েছে। এ সময় প্রায় এক ঘন্টা যাবৎ টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়।

সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশাদুল ইসলাম বিপ্লব। এ সময় বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জিটিভি জেলা প্রতিনিধি সোহেল রানা, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি  মিলন উল্লা, সহ-সভাপতি ও আর টিভি’র জেলার প্রতিনিধি শেখ হাসান বেলাল,  কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুন্সি তরিকুল ইসলাম। 

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও আনন্দ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ফিরোজ কায়সার , দপ্তর সম্পাদক এস, এম, ওয়ালিদুজ্জামান শুভ,নির্বাহী সদস্য ও এশিয়ান টেলিভিশনে মিরপুর- ভেড়ামারা প্রতিনিধি ফয়সাল চৌধুরি, এশিয়ান টেলিভিশনের কুমারখালী প্রতিনিধি কে এম আর শাহীন, এশিয়ান টেলিভিশনের দৌলতপুর প্রতিনিধি সোহানুর রহমান শিপন,  মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রধান প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদহ এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী শিপন কটূক্তি করলে এই নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ এবং পূর্ব বিরোধের জেরে হাসিবুর রহমান রিজুর ওপর এ হামলা চালানো হয়। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে হাসিবুর রহমান রিজু সভাপতি সম্ভাব্য প্রার্থী হন। গত বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে ওই নির্বাচনের মিটিং-এ অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে হরিপুর বাজারস্থ বিদ্যালয়ে মোটরসাইকেল যোগে যাচ্ছিলেন। এসময় পথে স্থানীয় প্রভাবশালী শিপন, মুরাদ ও রাজনের নেতৃত্বে কয়েকজন রিজুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ২০ থেকে ২৫ মিনিট দুই পা, দুই হাত ও মাথায় আঘাত করেন। এ সময় আরও ১৫ থেকে ২০ জন যুবক-কিশোর মারধরকারীদের ঘিরে রাখেন।

রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে প্রায় আধঘণ্টা ধরে পড়েছিলেন রিজু। সন্ত্রাসীরা এতই প্রভাবশালী যে বাজারে থাকা লোকজন এগিয়ে আসার সাহস পান না। দুঃখের বিষয় এ মামলায় এখন পর্যন্ত মূল আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। কেন এজাহার ভুক্ত আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছেনা এমন প্রশ্ন করেন  সাংবাদিক নেতারা। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত  আন্দোলন সংগ্রাম চলবে। এই আন্দোলন সংগ্রাম কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলবে বলে কঠোর  হুঁশিয়ারি দেন সাংবাদিক  নেতারা ।

এই সময় সাংবাদিকের নেতৃবৃন্দরা আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম এর ঘোষণা দেন।

বর্তমানে আহত সাংবাদিক গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা ট্রমা সেন্টারে  চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসিবুর রহমান রিজু (৪৫) হাটশ হরিপুর গ্রামের আমজাদ মালিথার ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় দৈনিক সত্য খবর পত্রিকার সম্পাদক।

এছাড়াও হাসিবুর রহমান রিজু ভারত-বাংলাদেশ যুব মৈত্রী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি একই সাথে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও এলাকায় নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যায়। আহত সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রিজুর স্ত্রী টপি বিশ্বাস কুষ্টিয়া মডেল থানায় বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামায় ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। 



মুনতাসির/সাএ