Mumbai local train: মুম্বই লোকালে গবাদি পশুর চেয়েও খারাপভাবে যাত্রী বহন করা হয়, ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেনে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। এখানকার লোকালে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। অনেক সময় ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে যাত্রা করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা। আর এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্র ও পশ্চিম রেলকে তীব্র ভর্ৎসনা করল বম্বে হাইকোর্ট। আদালত মন্তব্য করেছে, ‘মুম্বই লোকালে গবাদি পশুর থেকেও খারাপভাবে বহন করা হয় যাত্রীদের।’ লোকালে মৃত্যু নিয়ে দুই রেলের জেলারেল ম্যানেজারদের কাছে হলফনামা তলব করেছে হাইকোর্ট। এছাড়াও, আদালত এই গুরুতর সমস্যা সমাধানের জন্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল দেবাং ব্যাসের কাছে পরামর্শ চেয়েছে।

আরও পড়ুন: ট্রেনের মধ্যেই তরুণীর সঙ্গে নাচ পুলিশের, ইউনিফর্ম পরে একী কাণ্ড!

বম্বে হাইকোর্টের সম্প্রতি মুম্বই লোকালে মৃত্যু নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, টোকিওর পর দ্বিতীয় ব্যস্ততম রেল পথ হল মুম্বই। তবে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল সেখানে প্রতিবছর ২০০০ জনের মৃত্যু হয়। ভিড়ের চাপে, ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে অথবা ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের ফাঁকে পড়ে গিয়ে এই মৃত্যুর ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে মুম্বই লোকালে। কলেজ থেকে শুরু করে অফিস যাত্রীদের লোকাল ট্রেনে ওঠার জন্য কার্যত যুদ্ধ করতে হয়। এই অবস্থায় প্রতিকার চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন ইয়াতিম যাদব নামে এক ব্যক্তি। তাঁর পক্ষে আইনজীবী রোহন শাহ আদালতকে জানান, প্রতিনিয়ত এভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে অথচ দায় এড়িয়ে যাচ্ছে রেল। প্রতি ক্ষেত্রেই তারা অপ্রীতিকর ঘটনা বলে দাবি করছে।

পরে পশ্চিম রেলের পক্ষে আইনজীবী সুরেশ কুমার দাবি করেন, প্রতিদিন মুম্বই লোকালগুলিতে ৩৩ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০০৮ সালে একটি জনস্বার্থ মামলায় যাত্রী সুরক্ষায় রেলকে যে সমস্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সে নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করেছে রেল। এর জন্য প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের ফাঁকা জায়গা কমানো হয়েছে। এছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছে।

তবে রেলের আইনজীবীর সেই যুক্ত সন্তুষ্ট করতে পারেনি আদালতকে। এদিন বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবেন্দ্র কুমার উপাধ্যায় ও বিচারপতি অমিত বোরকার ডিভিশন বেঞ্চ রেলের কাছে জানতে চায়, যে ট্রেনে এভাবে মৃত্যু রুখতে রেল সক্ষম কিনা। এর পরেই রেলকে দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আদালত মন্তব্য করে, ‘যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য অবশ্যই আপনাদের আদালতের নির্দেশের উপর অপেক্ষা করতে হবে না।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। আপনারা গবাদি পশুর মতো যাত্রীদের বহন করছেন।’

ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই সমস্যার সমাধানের জন্য রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য, বিভাগীয় সেফটি কমিশন সহ অন্যান্য বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনা চিন্তা করা প্রয়োজন। বম্বে হাইকোর্ট পশ্চিম এবং মধ্য রেলের জেনারেল ম্যানেজারদের হলফনামা জমা দেওয়া নির্দেশ দিয়েছে। দুর্ঘটনা রাখার জন্য কী কী ব্যবস্থা রয়েছে তা জানাতে বলা হয়েছে। হলফনামা পাওয়ার পর যাত্রী সুরক্ষায় একটি সমীক্ষা চালানোর জন্য হাইকোর্ট কমিশনার বা বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি গঠনের কথা বিবেচনা করতে পারে।