এবারের লোকসভা ভোটের ফলাফলে কার্যত বাংলা জুড়ে সার্বিকভাবে ভালো ফল করতে পারেনি বিজেপি। আসন সংখ্যা গতবারের থেকে কমেছে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হল শহরাঞ্চলে কিন্তু বিজেপির ফলাফল বেশ ভালো হয়েছে। একের পর এক পুরসভার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে সেখানকার ফলাফল বিজেপির পক্ষে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক।
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে দুর্গাপুর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি এই তিন কর্পোরেশন এলাকাতেই এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। চন্দননগর পুর এলাকায় তৃণমূল কিছুটা এগিয়ে গেলেও বাস্তবে কিন্তু সেই ফলাফলে স্বস্তি ফেরেনি তৃণমূলের অন্দরে। কারণ যেভাবে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি তাতে টেনশনে পড়ে গিয়েছে চন্দননগরের তৃণমূল নেতৃত্ব।
দুর্গাপুর কর্পোরেশন
বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই দুর্গাপুর কর্পোরেশন। এবার এই কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। কিন্তু দুর্গাপুর কর্পোরেশন এলাকায় দেখা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ৪০টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে ৩৩টিতেই বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। তৃণমূল মাত্র ১০টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে।
আসানসোল কর্পোরেশন
আসানসোল কর্পোরেশন এলাকায় দেখা গিয়েছে, ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে৭৬টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। মাত্র ২৯টিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। তবে এই আসানসোল কর্পোরেশনটি আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সেখানে এবার বিজেপি সুবিধে করতে না পারলেও কর্পোরেশন এলাকায় অন্তত এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তৃণমূল শোচনীয়ভাবে পিছিয়ে রয়েছে।
শিলিগুড়ি কর্পোরেশন
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শিলিগুড়ি কর্পোরেশন। তৃণমূল জমানাতেও এখানে বামেরা দাপিয়ে রাজ করত। তবে বর্তমানে এই কর্পোরেশন তৃণমূলের দখলে। কিন্তু সেই কর্পোরেশন এলাকায় দেখা যাচ্ছে ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪৬টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তবে এই পুরসভা এলাকার কিছু ওয়ার্ড জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্য়ে পড়ে।
চন্দননগর পুরসভা
চন্দননগর পুরসভার ৩৩ আসনের মধ্যে ২৪টি ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। ৯টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বিজেপি কার্যত একেবারে ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে।
এবার প্রশ্ন কেন শহরাঞ্চলে এতটা পিছিয়ে পড়ল তৃণমূল? এনিয়ে নানা চর্চা চলছে তৃণমূলের অন্দরে। এই প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী দিনে যে সমস্যায় পড়তে পারে শাসকদল সেটা বলাই বাহুল্য। তবে তৃণমূল অবশ্য ইতিমধ্য়েই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে পড়েছে। নবান্ন থেকে একের পর এক ধমক দিয়েছেন। এরপর থেকে শহরবাসীর মন জয়ে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে পুলিশ প্রশাসন। বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চলছে। কিন্তু বিজেপি কি এই এগিয়ে থাকার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবে সেই প্রশ্নও রয়েছে।