‘‌খাড়গেজি, কী হল আপনাদের?’‌ অধীরকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস সভাপতিকে খোঁচা শমীকের

সংসদে বাদল অধিবেশন চলছে। আর তা সংসদের দু’‌কক্ষেই জোরদার বক্তব্য রাখছেন শাসক–বিরোধীরা। আর শাসকদলের রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে প্রথম বক্তব্য রাখলেন রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তবে সেই বক্তব্যে কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে নিশানা করতে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নাম তুলে আনলেন শমীক। আর তখনই প্রবল আপত্তি উঠতে শুরু করল সংসদের উচ্চকক্ষে। কংগ্রেস সাংসদরা এখানে আপত্তি জানিয়ে সরব হন—যিনি সংসদে নেই, তাঁর নাম করে এভাবে বক্তব্য রাখা যায় না। তখন রাজ্যসভার অধিবেশন পরিচলনা করছিলেন রাজীব শুক্লা। তিনিও শমীক ভট্টাচার্যকে থামিয়ে দেন।

তবে শমীক ভট্টাচার্য কৌশল করেই অধীর চৌধুরীর নাম ভাসিয়ে দেন রাজ্যসভায় নিজের বক্তব্যে। উদ্দেশ্য ছিল মল্লিকার্জুন খাড়গেকে আক্রমণ করা। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলায় ২০০ বেশি বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনের পর ৯জন খুন হন। কিন্তু আপনাদের একটা টুইটও আসেনি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আপনাদের ১০ জন কর্মী খুন হন। অধীর চৌধুরীর বিবৃতি প্রকাশ্যে আছে। কিন্তু আপনাদের কোনও বিবৃতি ছিল না। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আমার আকাশ–পাতাল রাজনৈতিক মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু তিনি বড় নেতা। তিনি শুধু নিজে জেতেননি, প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে জিতিয়ে এনেছিলেন।’

আরও পড়ুন:‌ পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই, কাদের নাম উঠল তালিকায়?‌

এই পর্যন্ত সব হজম করছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। কিন্তু অতীতের কথা টেনে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতেই কংগ্রেস সাংসদরা হইচই ফেলে দেন। প্রবল আপত্তি ওঠায় শমীককে থামিয়ে দেন রাজীব শুক্লা। অতীতে বাংলায় বামেদের বিরুদ্ধে সরব হতো কংগ্রেসের নেতারা। সেই ইতিহাস টেনে এনে শমীক বলতে থাকেন, ‘‌একটা সময় বামেদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলত কংগ্রেস। আবার বামেরাও বলত, সাতের দশকে কংগ্রেসের সন্ত্রাসের কথা। কিন্তু এখন সেই বাম–কংগ্রেসই জোট করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বাংলায়। খাড়গেজি, কী হল আপনাদের? কাদের সঙ্গে সমঝোতা করে বিজেপির বিরোধিতা করছেন?’ এখানেই আপত্তি তোলেন কংগ্রেস সাংসদরা।

বাংলায় বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট বা আসন সমঝোতা যাইহোক না কেন তাতে মূল কারিগর ছিলেন অধীর চৌধুরীই। এআইসিসি না চাইলেও অধীরের জেদের জন্য এবার বাম–কংগ্রেস জোট হয়। আর বাংলায় তার ফলাফল সবাই দেখতে পেয়েছেন। কংগ্রেস একটি আসন পেয়েছে। আর বামেরা শূন্য পেয়েছে। এইসব তথ্য তুলে ধরেন শমীক ভট্টাচার্য। বক্তব্যে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, সংস্কৃত ভাষাকে ছুঁয়ে কথা বলেছেন শমীক। আবার জওহরলাল নেহরু থেকে পিথাগোরাসের তত্ত্ব এনেছেন নিজের বক্তব্যে। এমনকী হিন্দি ছবির গানের লাইনও ব্যবহার করেছেন।