‘‌এঁদের মধ্যে সারাক্ষণ ঝগড়া হয়’‌, হুগলিতে পা রেখেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সতর্ক করলেন রচনা

লোকসভা নির্বাচনের পর দেখা যায়, হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কয়েকটি বিধানসভায় ভোট কমেছে তৃণমূল কংগ্রেসের। আবার কোথাও এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই ফল দেখে বেজায় ক্ষেপে যান বিধায়ক অসিত মজুমদার। জেলার কয়েকজন নেতা কর্মীকে ঢেকে ধমক দেন। তখনই সামনে এসেছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়। এবার হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তা বুঝতে পারলেন। কারণ দুই নেতা হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে একসঙ্গে ঘোষণা করছেন এবং স্লোগান দিচ্ছেন। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের প্রস্তুতি হিসাবে। আর পান্ডুয়া ব্লকের ওই দুই দলীয় নেতার এমন কাণ্ড দেখে তাঁদের ‘টম’ এবং ‘জেরি’ কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে তুলনা করলেন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একুশে জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ সমাবেশ হবে। তাই সোমবার বিকেলে পান্ডুয়ার তেলিপাড়ায় প্রস্তুতি সভা হয়। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের হুগলি–শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন, চেয়ারপার্সন অসীমা পাত্র, স্থানীয় বিধায়ক রত্না দে নাগ–সহ অন্যান্যরা। আর ওই দুই নেতা হলেন, ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম এবং প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ। যাঁরা একসঙ্গে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে প্রচার করছিলেন। তাঁদেরকেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্বোধন করেন ‘‌টম’‌ আর ‘‌জেরি’‌ বলে। এটা শুনে তখন তাঁরাও চুপ। জনপ্রিয় দুই কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে সাংসদ দুই নেতার মিল তুলে ধরায় হাসির রোল ওঠে। আর এভাবেই পান্ডুয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে বুঝিয়ে দিলেন রচনা। তাই তো রচনা বলেন, ‘‌আমি পান্ডুয়া ব্লকে মাসে একবার করে আসব। মানুষের সঙ্গে কথা বলব।’‌

আরও পড়ুন:‌ পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত বৃ্দ্ধার মিলল না হুইলচেয়ার, তিন ঘণ্টা বসে দিল্লির বিমানবন্দরে

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে রচনা বুঝতে পেরেছেন সেটা বুঝিয়েও দিয়েছেন। এমনকী সেটা তিনি শীর্ষ নেতৃত্বকেও জানাতে পারেন। আনিসুল এবং সঞ্জয়ের স্লোগান চলাকালন চেয়ার ছেড়ে উঠে সঞ্জয়ের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে রচনা হাসতে হাসতে বলেন, ‘একটা কার্টুন হয় বাচ্চাদের। আমরাও বড়রা মজা করে দেখি। টম অ্যান্ড জেরি। এখানে তেমন সঞ্জয় ও আনিসুল। এঁদের দু’জনের মধ্যেও মিল আছে। আমি এঁদের ভালবাসি। আবার এঁদের মধ্যে সারাক্ষণ ঝগড়া হয়। এখানে সঞ্জয় একবার মাইকে কথা বলছে, আবার পাল্টা আনিসুল মাইকে বলছে। আমি বলি, ওরে থাম।’‌ এই কথা শীর্ষ নেতাদের কানে গেলে বিষয়টি যে ভাল হবে না তা বুঝতে পারছেন আনিসুল–সঞ্জয়।

এই কথা শুনে চাপে পড়ে যান আনিসুল–সঞ্জয়। তাই বিষয়টিকে হালকা করতে সঞ্জয় বলেন, ‘আমরা দু’জনেই করেছি। রচনাদি আমাকে স্নেহের চোখে দেখেন। দিদি মজা করে বলেছেন আমাদের।’ আনিসুলের বক্তব্য, ‘ভালবেসে এসব বলেছেন দিদি।’ এভাবে বিষয়টিকে হালকা করতে চাইলেও যে যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন। দু’জনের মধ্যে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে এভাবেই বুঝিয়ে দেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখন থেকেই এখানে চর্চিত হচ্ছে, কার্টুনে টম একটি বিড়াল। জেরি ছোট ইঁদুর। অর্থাৎ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কারা করেন সেই বার্তাও দিলেন রচনা।