প্রত্যেক জেলায় বিনামূল্যে বায়োপসি পরীক্ষা শুরু, ক্যানসারের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য দফতরের বড় উদ্যোগ

এতদিন বায়োপসি পরীক্ষা করতে বিস্তর হ্যাঁপা পোহাতে হতো রোগীদের। একদিকে বড় খরচ সামলানো অপরদিকে সময় নষ্ট করে শারীরিক ঝামেলা সহ্য করা। তাও আবার জেলায় এমন পরিষেবা পাওয়া বেশ কঠিন। কারণ সব জায়গায় এই পরিষেবা নেই। তার জেরে আসতে হতো শহরে। সুতরাং খরচ ও সময় দুইই ব্যয় করতে হতো। তার সঙ্গে তো শারীরিক সমস্যা আছেই। এখন আর এসব করতে শহরে আসার দরকার নেই। কারণ রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় ক্যানসার পরীক্ষার জন্য বায়োপসি শুরু হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা এই পরীক্ষা করতে খরচ নেয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সেখানে বাংলার নানা জেলা হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজে এই পরিষেবা মিলছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বলে স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে খবর।

স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে খবর, এই বায়োপসি পরীক্ষার জন্য মানুষজনকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হতো। সেটা থেকে মুক্তি চেয়ে অনেকেই নানা আবেদন করেন। বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে পরামর্শও দেন। এইসব পরামর্শ পাওয়ার পর ২০২৩ সালে বিনামূল্যে বায়োপসি পরীক্ষার কর্মসূচি বাস্তবায়িত করার পরিকল্পনা শুরু হয়। তারপর তা করতে চার থেকে পাঁচ ধরনের যন্ত্র আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কাজ শুরু করেন। তারপর এখন বায়োপসি পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে প্রত্যেক জেলায়। ক্যানসার আক্রান্তদের ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে প্রত্যেক জেলায় রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্যদফতর। এই নয়া কর্মসূচির নাম ‘ডিস্ট্রিক্ট ক্যানসার কেয়ার প্রোগ্রাম’।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌পিছিয়ে থাকার দায় নেব না আমি’‌, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখেই সপাট জবাব মনোরঞ্জনের

এই পরিষেবা চালু হওয়ার পর ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের অর্থ এবং সময় দুই বাঁচবে। তার সঙ্গে শারীরিক ঝক্কি পোহাতে হবে না। এই বিষয়ে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের রেডিওথেরাপি’র প্রধান অধ্যাপক ডাঃ শ্রীকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘আমরা এখন জেলাস্তরে বায়োপসি করার কাজ শুরু করতে পেরেছি। তার ফলে মানুষের টাকা, সময় দুই বাঁচবে। রোগীর ভোগান্তিও কমছে। ক্যানসার চিকিৎসার পরিকাঠামো আগের থেকে অনেক শক্তিশালী হয়েছে।’ ইতিমধ্যেই ৩৮ জায়গায় শুরু হয়েছে বায়োপসি করার কাজ। এখন ২৪টি মেডিক্যাল কলেজ এবং ১৪টি জেলা হাসপাতালে ব্যবস্থা রয়েছে। বায়োপসি করার পরিকাঠামো হিসাবে প্যাথোলজিস্ট, ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্টের মতো কর্মী এবং মা‌ইক্রোটোমের মতো যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করেছে স্বাস্থ্যদফতর। তারপর বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়েছে।

এই রোগ নির্ণয় করতে প্রচুর টাকা খরচ করে এখন থেকে শহরে আসা কমবে। আর বায়োপসি রিপোর্ট দেখে সংশ্লিষ্ট জেলাতেই কেমোথেরাপি দেওয়ার কাজ শুরু করা যাচ্ছে। আর ‘রে’ দিতে হলে পাঠানো হচ্ছে জেলার রেডিওথেরাপি থাকা পরিকাঠামো যুক্ত মেডিক্যাল কলেজে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এই পরিকাঠামো আছে। আর মালদাতেও আছে। সুতরাং রোগীদের টানাপোড়েন কমছে।