Ulto Rath Yatra History: উল্টো রথের ইতিহাসে জড়িত এই মহান রাজা, প্রভু জগন্নাথের অর্ধ মূর্তির রহস্য ফাঁস

আষাঢ় মাসের দ্বিতীয়ায় শুক্লপক্ষে রথযাত্রায় বেরিয়ে পড়েন প্রভু জগন্নাথ। দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে তাঁর এই স্বর্গীয় রথযাত্রা হিন্দু শাস্ত্রীয় বিধি মেনে ধুমধাম সহকারে আয়োজিত হয়। পুরীতে এই রথযাত্রার মহাসমারোহ তো দেখার মতো। কিন্তু, এই জগন্নাথ প্রভুর রথযাত্রা ও তাঁর বাড়ি ফেরার এই উল্টোরথ ঘিরে জমাট বেঁধেছে বেশ কিছু অনন্য কাহিনি। এই কাহিনিগুলো রথযাত্রা, উল্টোরথের মাহাত্ম্য প্রচার করে।

বিশদে জগন্নাথ দেবের বহুড়া যাত্রা

পুরীর রথযাত্রা গুন্ডিচা যাত্রা নামে পরিচিত। এইদিন রথে জগন্নাথদেব তাঁর মাসির বাড়ি যান। আট দিন ধরে বলরাম ও সুভদ্রাকে নিয়ে শেখানেই থাকেন। এরপর দশমী তিথিতে ৯ দিনের মাথায় গুন্ডিচা মন্দির থেকে বাড়ি ফেরেন। নন্দীঘোষ রথে চড়েন জগন্নাথ, বলরাম চড়েন তালধ্বজে, সুভদ্রা দর্পদলন রথে চড়ে এই যাত্রা সম্পন্ন করেন। উল্টো পথে রথ আসায় এই যাত্রা উল্টোরথ নামে পরিচিত। বহুড়া যাত্রাও বলা হয়।

কবে চালু হয়েছিল রথ যাত্রা

মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নর আমলে রথযাত্রার প্রথা চালু হয়েছিল। কারণ কথিত আছে যে তাঁর আমলেই নাকি জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি তৈরি করা হয়েছিল।

এই রাজাই বা কেন প্রভুর মূর্তি স্থাপন করেছিলেন

কথিত আছে যে সত্যযুগে রাজা ইন্দ্রদ্যুন্মের স্ত্রী গুন্ডিচা নিজের কাছে শ্রীকৃষ্ণকে কিছুদিন রাখার আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। তখন থেকেই এই প্রচলন। যদিও কপিলা সংহিতা, ব্রহ্ম পুরাণ, পদ্ম পুরাণ ও স্কন্দ পুরাণ দেয় অন্য তথ্য। ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ বলে, রাজা ইন্দ্রদ্যুন্ম ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। সমুদ্রে ভেসে আসা কাঠের খণ্ড দিয়ে দেবমূর্তি নির্মাণের আদেশ পেয়েছিলেন তিনি। কেউ কেউ আবার বলে, স্বপ্নে বিষ্ণু মন্দির গড়ার আদেশ পেয়েছিলেন রাজা। মূর্তি গড়ার দায়িত্ব পড়েছিল স্বয়ং বিশ্বকর্মার কাঁধে। শর্ত ছিল যে মূর্তি গড়ার সময়ে কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু রাজা সেই শর্ত মানতে পারেননি।

আরও পড়ুন: (Ulto Rath Yatra: মাসির বাড়ি থেকে ফিরেও ৩ দিন বাইরে থাকবেন জগন্নাথ! উল্টোরথের এই অজানা রীতি জানতেন)

মূর্তি গড়ার সময় মন্দিরের ভিতর থেকে কোনও আওয়াজ না পেয়ে রাজা প্রবেশ করেছিলেন মন্দিরে। মূর্তি তখন সবেমাত্র অর্ধেক গড়া হয়েছে। রাজা ঢুকে পড়ায় আর সম্পূর্ণ হয়নি মূর্তি, অদৃশ্য হয়ে যান বিশ্বকর্মা। অগত্যা রাজা তারপর থেকে সেই মূর্তিকেই দেবজ্ঞানে পুজো করেন। তখন থেকেই পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার পুজো হয়ে আসছে।

রথযাত্রা নিয়ে দ্বিমত

যদিও অনেক ঐতিহাসিকই রথযাত্রার ইতিহাসে অন্য গল্প বলেন। তাঁদের দাবি, ১০৭৮ সালে তৈরি হয়েছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দির। এরপর, ১১৭৪ সালে মেরামতি করানোর পরেই নাকি আজকের এই জগন্নাথ মন্দির গড়ে ওঠে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে রথযাত্রা।