সিঙ্গুর থেকে টাটাদের বিতাড়িত করা কতটা যুক্তিসংগত ছিল তা নিয়ে নানা সময়ে নানা বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল। তবে সেসব আজ অতীত। আজও সিঙ্গুরে গেলে চোখে পড়ে কারখানার কঙ্কাল। কিন্তু এখন যেখানে কারখানার পরিত্যক্ত অংশ, সেখানেই তো একটা সময় চাষ আবাদ করা হত। এই বর্ষার সময় চাষিদের ব্যস্ততা থাকত চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সেসবও আজ অতীত।
সিঙ্গুরের সেই জমির একাংশ এখনও চাষযোগ্য করা যায়নি। এর জেরে ওই জমির মালিকরা এখনও তাঁদের সেই জমিতে চাষ করতে পারছেন না। এদিকে সেই জমির মালিকরা আপাতত চিন্তাভাবনা করছেন যে তাঁরা এবার সরকারে দ্বারস্থ হবেন যাতে তাঁদের জমিকে চাষ যোগ্য অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
যে অংশ মূল কারখানার কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল সেখানে কি আদৌ আর চাষ করা সম্ভব?
এনিয়ে অতীতের জমি আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্য়েই কয়েকদফা মিটিং করেছেন। কোনও দলের তরফে নয়। দলমত নির্বিশেষে সেই মিটিংয়ে শামিল হয়েছিলেন তাঁরা। অবশেষে তাঁরা দেখেছেন যে অংশে মূল কারখানার পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছিল সেখানে কংক্রিট সরিয়ে চাষের উপযোগী করে জমি তৈরি করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আপাতত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে ওই জমিতে যদি কোনও শিল্পোদ্যোগী শিল্প তৈরি করেন তবে সেক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধে হবে। আর বাকি জমির যে অংশটা চাষ যোগ্য করা যাবে সেগুলিকে যাতে ফের চাষযোগ্য করা যায় সেটার ব্যবস্থা করা হোক। কারণ বছরের পর বছর ধরে জমি পড়ে রয়েছে। কিন্তু সেই জমি কোনওভাবেই ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আপাতত রাজ্য় সরকারে কাছে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে জানানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষকদের একাংশ।
এদিকে বাম আমলে ‘বহু ফসলি’ জমিতে কারখানা করতে দেওয়া যাবে না, এই দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। পরবর্তীতে সেই সিঙ্গুর আন্দোলন তাঁকে রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট সুবিধা দিয়েছিল বলে মনে করা হয়। এরপর মুখ্য়মন্ত্রীর চেয়ারে বসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আশ্বাস দিয়েছিলেন যে জমি চাষযোগ্য করে ফেরত দেওয়া হবে। কথা মতো কিছু কাজ শুরুও হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথেই থমকে যায় সেই কাজ।
তবে যেটা মনে করা হচ্ছে কোভিড পরিস্থিতি, নির্বাচন সব মিলিয়ে সেই কাজ কিছুটা গতি হারিয়েছিল। তবে ফের সেই কাজ শুরু করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।