অবশেষে ধরা পড়ল জামাল সর্দার, সোনারপুরের ত্রাস তিনদিন পর পুলিশের জালে

অবশেষে তিনদিন পর পুলিশের জালে ধরা পড়ল সোনারপুরের জামালউদ্দিন সর্দার। পুলিশের জালে পড়তেই সোনারপুরের ‘‌ত্রাস’‌ জামাল সর্দার এখন আর বেরতে পারল না। টানা তিনদিনের প্রচণ্ড চেষ্টায় আজ, শুক্রবার রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এবং নরেন্দ্রপুর থানার সীমান্ত এলাকা থেকে জামাল সর্দারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আর আগামীকাল শনিবার তাঁকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হবে। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক লাভলি মৈত্র বলেছিলেন, জামাল সর্দারকে পুলিশ গ্রেফতার করবেই। একেবারে মিলে গেল বিধায়কের কথা। আর তাতে খুশি স্থানীয় মানুষজন। বিশেষ করে যাঁরা অত্যাচারিত হয়েছিলেন।

জামাল সর্দারের বিরুদ্ধে মুখ খুলে ছিলেন একের পর এক নির্যাতিতা মহিলা। তার মধ্যে আরও একজন মহিলাকে এবং তাঁর স্বামীকে সারারাত ধরে মারধর করার অভিযোগও উঠেছিল জামালের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে শিকল দিয়ে বেঁধে উলটো করে ঝুলিয়ে সারারাত ধরে মারধর করে ওই জামাল। স্বামীকে বাঁচাতে জামালের হাতে পায়ে ধরলেও মারধর থামায়নি সে। এই গৃহবধূর সঙ্গে দেখা করে কথা দিয়েছিলেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র। জামাল সর্দারকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত জামাল শ্রীঘরে।

আরও পড়ুন:‌ রাজ্যপালের মানহানি মামলায় ডিভিশন বেঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী, এক্স হ্যান্ডেলে ফোঁস করলেন বোস

গত ৭ জুলাই জামাল সর্দারের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সালিশি সভার নামে এক মহিলার পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ হয়েছিল। ওই ঘটনায় জামাল সর্দারের দুই সাঙ্গপাঙ্গ মুজিদ খাঁ এবং অরবিন্দ সর্দারকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সোনারপুরের থানার পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে জামাল সর্দারের কোনও খোঁজ মিলছিল না। একের পর এক গ্রামবাসী তাঁর বিরুদ্ধে সালিশি সভা বসিয়ে হেনস্থা, তোলাবাজির অভিযোগ করেছিলেন। তখন থেকেই ‘পলাতক’ ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ত্রাস ওই জামাল সর্দার।

এই ঘটনার পর রুবিজানের স্বামী জানান, তাঁদের পারিবারিক গণ্ডগোল হয়েছিল। তাই একদিন রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জামালের লোকজন। তিনি বলেছিলেন, ‘‌জামাল একা নয়, মুজি, উসমান, অরবিন্দ নামে চারজন আমায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল। গ্রিলে বেঁধে মারধর করেছিল। উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখে মেরেছে।’‌ জামালের বিশাল বাড়ির সামনের গেটে ঝুলছিল বড় তালা। বন দফতরের অফিসাররা গিয়েও তাই খালি হাতে ফিরে এসেছিল। জামালের বাড়ির সুইমিং পুলে কচ্ছপ আছে। পুলিশ জামালের মোবাইল লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করতে থাকে। মঙ্গলবার দুপুরের পর সেই মোবাইল ফোন ভাঙড়ের কাছে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর খুলতেই পুলিশ ধরে ফেলে জামাল সর্দারকে এবং সফল হয় অপারেশন।