মিছিল–সমাবেশে জারি নিষেধাজ্ঞা, অগ্নিগর্ভ ঢাকা, বাতিল করা হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস

হরতাল–বিক্ষোভ–সংঘর্ষ–মৃত্যুমিছিলে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। কোটা বিরোধী আন্দোলনে এই পরিস্থিতি তৈরি হয় ওপার বাংলায়। আর তাই ঢাকায় সবরকম সভা–সমাবেশ–মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকায়। আজ, শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন এই ঘোষণা করেন। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর থেকে আজ শুক্রবার বেলা ২টো পর্যন্ত কোথাও কোনও ট্রেন চলাচল করেনি। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে তা নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ রাখা যাবে না বলে দাবি তুলে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলিগ–যুবলিগের সংঘর্ষ চরমে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতে নামানো হয় সেনা। প্রথমে ঢাকা তারপর দেশের প্রায় সব বড় শহরে এই ছবি দেখা যায়। ঢাকার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সাঁজোয়া গাড়ি। তবুও পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না। ঢাকা পুলিশ সূত্রে খবর, বড় ধরনের হিংসা–প্রাণহানির আশঙ্কাতেই জমায়েতে রাশ টানা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারও হিংসা ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছে। রেল সূত্রে খবর, সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার ভিতরে কোনও ট্রেন প্রবেশ করবে না এবং ঢাকা থেকে কোনও ট্রেন যাবেও না। সুতরাং সারা দেশেই রেল চলাচল বন্ধ করে হয়ে পড়েছে। যা বেশ উদ্বেগের।

আরও পড়ুন:‌ মানিকচকের ঘটনায় সিটুর বনধে প্রভাব পড়ল না, গোটা এলাকায় থমথমে পরিবেশ

অন্যদিকে ঢাকা–কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে শুক্রবার এবং শনিবার দু’‌দিনের জন্য। দু’‌তরফেই ট্রেন যাতায়াত করবে না। এই বাতিলের খবর রেলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর ঢাকার ভিতরে ট্রেন চলাচল করলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে জমায়েত করতে পারবে। রেল ব্যবহার করে যাতে এসব করা না যায় তাই এমনটা করা হয়েছে। এই আন্দোলন এবং হিংসার জেরে এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩২জন। সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তার মধ্যে ঢাকাতেই মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। ঢাকার উত্তরা এলাকায় সাতজন মারা গিয়েছেন। ঢাকার যাত্রীবাড়ি এলাকায় মৃত্যু হয়েছে এক সাংবাদিকেরও।

এছাড়া হিংসার খবর মিলেছে নওগাঁও, পাবনা, নেত্রকোণা, নারায়ণগঞ্জ–সহ আরও নানা এলাকা থেকে। রেল সূত্রে খবর, আন্তনগর, মেইল, লোকাল এবং কমিউটার মিলে সারা দেশে ৩০০’‌র বেশি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। মালবাহী ট্রেন সারা দেশে সাড়ে ৩০০’‌র বেশি চলে। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে এসব ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তেই এখন ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এই আন্দোলন আছড়ে পড়ে ট্রেন চলাচলের উপরও। কারণ রেল অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে।