জ্যোতিষীর রহস্যমৃত্যুতে আলোড়ন বজবজে, পচাগলা দেহ ঘর থেকে উদ্ধার করল পুলিশ

এবার এক জ্যোতিষীর রহস্যমৃত্যুতে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে জ্যোতিষীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আর ওই জ্যোতিষীর নিজের ঘর থেকেই পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। আজ, শুক্রবার সকালে ওই জ্যোতিষীর বাড়ি থেকে পচা দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। যা প্রতিবেশী পেয়ে চমকে ওঠেন। এমন দুর্গন্ধ পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। আর এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টি জানান বজবজ পুরসভার চেয়ারম্যানকে। তিনি কালবিলম্ব না করে পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই জ্যোতিষীর ঘরের দরজা ভেঙে তাঁর পচাগলা দেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মৃত জ্যোতিষীর নাম ত্রিদিব দাশগুপ্ত (‌৫৫)‌। তিনি বজবজ পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের এমএন ঘোষ রোডের বাসিন্দা। এই বাড়িতে জ্যোতিষী একাই থাকতেন। ত্রিদিববাবু জ্যোতিষ চর্চার সঙ্গে বহুদিন ধরে যুক্ত। এই জ্যোতিষ চর্চার কাজে মাঝেমধ্যেই বাইরে যেতেন ত্রিদিব দাশগুপ্ত। পুলিশ আজ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে এটা খুন না আত্মহত্যা। তবে এটা রহস্যমৃত্যু বলেই মনে করা হচ্ছে। কেমন করে জ্যোতিষীর মৃত্যু হল?‌ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

আরও পড়ুন:‌ মিছিল–সমাবেশে জারি নিষেধাজ্ঞা, অগ্নিগর্ভ ঢাকা, বাতিল করা হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস

স্থানীয় সূত্রে খবর, জ্যোতিষী ত্রিদিব দাশগুপ্ত খুব হাসিখুশি মানুষ ছিলেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তবে সেটা খুব চিহ্নিত করেই। এলাকায় তাঁর একটা পরিচিতি ছিল। যার জন্যই ত্রিদিববাবু ২০১০ সালে পুরসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বিরাট ওঠাবসা বা দৈনন্দিন রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েননি ত্রিদিববাবু। সবার সঙ্গে কথা বলতেন। নিজের কাজ নিজেই করতেন। সারাদিনে বাড়ি থেকে বেশ কয়েকবার ঢুকতে–বেরতে দেখা যেত। যা ইদানিং কমে গিয়েছিল। তবুও তাতে খুব একটা সন্দেহ তৈরি হয়নি। বাড়িতে পুজো তিনি নিজেই করতেন।

তাহলে এমন ঘটল কেন?‌ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কদিন আগেই ত্রিদিব দাশগুপ্তর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই মৃত্যুর কারণে নিয়েই তৈরি হয়েছে বিস্তর ধোঁয়াশা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না হাতে এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা সম্ভব নয়। বার্ধক্যজনিত অসুখ তাঁর ছিল না বলেই জানা গিয়েছে। সুস্থ মানুষের এভাবে মৃত্যুর কারণেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বজবজ থানা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলাও চলছে পুলিশের পক্ষ থেকে। শেষ কবে ত্রিদিববাবুকে দেখা গিয়েছিল সেটা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। বাড়িতে কারা আসা–যাওয়া করত তাও খোঁজ করা হচ্ছে।