মানিকচকের ঘটনায় সিটুর বনধে প্রভাব পড়ল না, গোটা এলাকায় থমথমে পরিবেশ

মালদার এনায়েতপুরে পুলিশ–জনতা খণ্ডযুদ্ধে পুলিশের গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। পুলিশের গুলিতে দু’‌জন জখম হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর ডাকে মানিকচক ব্লক জুড়ে চলছে ১২ ঘন্টার বনধ। এখন থমথমে পরিবেশ রয়েছে এনায়েতপুর–সহ পার্শ্ববর্তী এলাকা। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। সিটুর ডাকা ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েনি। তবে সকাল থেকেই মানিকচকের নানা এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। আবার কিছু জায়গায় খোলাও রয়েছে। রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। তবে সংখ্যা অন্যান্য দিনের চেয়ে কম রয়েছে। এনায়েতপুর এলাকায় কার্যত পুরুষশূন্য হয়েছে গোটা এলাকা।

এদিকে চলছে বিশাল পুলিশের টহলদারি। নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখতে এলাকা পরিদর্শনে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণ সম্ভব জৈন। তিনি জানান, এখন এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। নতুন করে কোন অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। বনধের কোন প্রভাব পড়েনি এলাকায়। এই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সম্ভব জৈন বলেন, ‘‌দোকানপাঠ খোলা রয়েছে। রাস্তায় এখন মানুষজন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় পুলিশ জোরদার নজরদারি চালাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’ মানিকচকে রণক্ষেত্রের ঘটনার পর জখম আইসি–সহ দুই পুলিশ কর্মী এবং গুলিবিদ্ধ দুই পথচারীর সঙ্গে মালদা মেডিকেল কলেজে রাতেই দেখা করেন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন মালদা মেডিক্যাল কলেজে যান।

আরও পড়ুন:‌ ‘ছোট বিরতি’ শেষ করে শহরে ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দেখা মিলবে একুশের মঞ্চে‌

অন্যদিকে মালদা মেডিকেল কলেজে মানিকচক থানার আইসি পার্থসারথি হালদার সহ মোট তিনজন পুলিশকর্মীর সঙ্গে দেখা করেন। আর পুলিশের গুলিতে জখম আরও দুই অসুস্থ যুবকদের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী। গতকাল বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে মানিকচক এলাকা। তারই প্রতিবাদ জানাতে এনায়েতপুর অঞ্চল–সহ ১০ জায়গায় পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওঠাতে যায়। আর তখনই পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। মারধর করা হয় পুলিশকর্মীদের। তখনই পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগ। যার রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন।

এছাড়া এই এলাকায় বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার করে হয়েছিল, ৩৩ হাজার কেভি লাইনে সমস্যার জেরে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন হবে। কিন্তু সেটা ঠিক হয়নি বলেই দাবি ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারই প্রতিবাদে সরব হয় এলাকাবাসী। যদিও বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগে যেভাবে এলাকা তপ্ত হয়েছিল তাতে কিছুটা অবাক পুলিশ প্রশাসন। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‌এই তিনটি টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে সমস্যা মিটে গিয়েছে। শুক্রবার থেকে কাজ শুরু হবে।’‌ আর মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের কথায়, ‘‌যে ঘটনা মানিকচকে ঘটেছে তা কাঙ্খিত নয়। মানিকচক থানার আইসির বেশি চোট লেগেছে। আমরা চাই দ্রুত যাতে সকলেই সুস্থ হয়ে উঠুক।’‌ মানিকচকের হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।