Moon Day: চন্দ্র দিবস! কেন পালিত হয় এই দিনটি, জানেন না বেশির ভাগই

কেউ বলেছেন, চাঁদ কেন আসে না আমার ঘরে। কারও কথায়, আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা। আসলে চাঁদকে ভালোবেসে অনেক ছন্দ সাজিয়েছেন বাঙালিরা। আর আজ এই চাঁদেরই দিন। কারণ চাঁদ, এখন আর কবিতায়, গানে কিংবা ছন্দেই শুধু সীমাবদ্ধ নেই, তার আলোয় বিজ্ঞানকেও আলোকিত করে চলেছে। মানুষের মনে এবার সত্যিই সত্যিই চাঁদে বাড়ি বানানোর বাসনা জাগছে। বহু বছর আগে, চাঁদে পা ফেলে নীল আর্মস্ট্রং যে স্থান দিয়ে হেঁটে গিয়েছিলেন, চন্দ্র্যপৃষ্ঠের সেই স্থানে নাকি এবার থাকার জন্য গুহাও খুঁজে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। সব মিলিয়ে চাঁদ এখন গবেষণার বিষয়।

আর পৃথিবীর এই উপগ্রহটির জন্যই তাই একটি নির্দিষ্ট দিন উৎসর্গ করা হয়েছে। আজ, ২০ জুলাই, সেই দিন, চন্দ্র দিবস। নীল আর্মস্ট্রংও এই দিনেই চাঁদে পা রেখেছিলেন। এ প্রসঙ্গে, কলকাতা বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের প্রাক্তন পরিচালক, ডাঃ দেবীপ্রসাদ দুয়ারি, চাঁদ দিবসের তাৎপর্য প্রতিফলিত করে, বলেছেন, এই দিন চাঁদে অবতরণ করার জন্য মানুষের দীর্ঘকালের ইচ্ছাকে স্মরণ করে।

কেন পালিত হয় চাঁদ দিবস

২০ জুলাই, ১৯৬৯ তারিখে, নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন প্রথমবারের মতো চাঁদে পা রেখে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন। এই স্বর্গীয় মাইলফলকটি তখন থেকে খুব ধুমধাম করে পালিত হয়েছে এবং ২০২১ সালে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে আন্তর্জাতিক চাঁদ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে।

চন্দ্র অন্বেষণে ভারতের অবদান

ভারত চন্দ্র অন্বেষণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, এই মহাজাগতিক কাহিনীতে নিজস্ব অধ্যায় যুক্ত করেছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) চন্দ্রযান মিশনের মাধ্যমে ইতিহাস তৈরি করেছে। চন্দ্রযান১ ভারতের প্রথম চন্দ্র অনুসন্ধান ছিল এবং এটি চাঁদের পৃষ্ঠে জলের অণুগুলির একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছিল। চন্দ্রযান-২ একই পথ অনুসরণ করেছিল। এরপর অতি সম্প্রতি, ২০২৩ সালে লঞ্চ করা চন্দ্রযান-৩, চন্দ্রপৃষ্ঠ গভীরভাবে বিশ্লেষণ ও পরিচালনা করার জন্য সফলভাবে একটি রোভার মোতায়েন করে ভারতের চন্দ্রকে জানার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।

মুন ভিলেজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাজাগতিক উদ্যোগ

মুন ভিলেজ অ্যাসোসিয়েশন (এমভিএ), চন্দ্র উৎসাহিদের একটি দল, আন্তর্জাতিক চাঁদ দিবসের প্রস্তাব পাঠিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমোদন নিয়ে এই দিবসের সূচনা করেছিল। তখন থেকেই, এমভিএ এর নেতৃত্বে রয়েছে, সারা বিশ্ব জুড়ে চন্দ্র উৎসবের আয়োজন করছে। এই বছরের থিম, ছায়াকে আলোকিত করা, আমাদের চাঁদের লুকানো গভীরতা এবং আমাদের ভবিষ্যতে চন্দ্র প্রচেষ্টা অন্বেষণ করতে আমন্ত্রণ জানায়। দুই বছর আগে যেমন কলকাতায় হয়েছিল ঠিক তেমনই এ বছরও মুম্বাইয়ে হচ্ছে এই বিশেষ দিনের অনুষ্ঠান। ইভেন্টটি ১৭ জুলাই শুরু হয়েছিল এবং ২০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

আরও পড়ুন: (Bangla Jokes Collection: উইকেন্ডে একটু মজা তো করতেই হবে! ৩ মিনিট মনখুলে হাসুন, পড়ুন দিনের সেরা ৫ জোকস)

কলকাতায় বসে চাঁদ দিবস কীভাবে পালন করবেন

সিনেম্যাটিকভাবে: বর্ষার মরসুমে যদি আকাশ মেঘলা থাকে, টেলিস্কোপ তো আর কাজে আসবে না, তাই তখন ডিজিটাল স্ক্রিন আপনাকে সাহায্য করতে পারে। চাঁদ-থিমযুক্ত কোনও সিনেমা দেখতে পারেন। যেমন, স্কারলেট জোহানসন এবং চ্যানিং টাটাম অভিনীত ফ্লাই মি টু দ্য মুন দিয়ে আপনার চন্দ্র উদযাপন শুরু করুন। ফার্স্ট ম্যানও একটি ভালো অপশান হতে পারে, এই ছবিটি নীল আর্মস্ট্রংয়ের চন্দ্রাভিযানের চিত্র তুলে ধরে। আপনি যদি কিছু ক্লাসিক মুভির মুডে থাকেন, তবে স্ট্যানলি কুব্রিকের ২০০১: এ স্পেস ওডিসি দেখতে পারেন।

যোগব্যায়াম করুন: যোগ হল প্রকৃতির ছন্দের সমান একটি স্বাস্থ্যকর নৃত্য। আর চাঁদের আদুরে আলোয় যোগব্যায়াম করলে, তন মন সবই শান্তির খোঁজ পেতে পারে। আজ চাঁদকে আপনার স্বর্গীয় যোগ প্রশিক্ষক হিসাবে কল্পনা করুন, আপনার মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য পাবেন।

চন্দ্র সাহিত্যে ডুব দিন: যাঁরা চাঁদের মতো শান্ত, তাঁদের জন্য চন্দ্র সাহিত্য একটি নিখুঁত বিকল্প হতে পারে। রবার্ট এ. হেইনলেইনের দ্য মুন ইজ আ হার্শ মিস্ট্রেস, জন কেসেলের দ্য মুন অ্যান্ড দ্য আদার, অ্যান্ড্রু স্মিথের মুনডাস্ট এবং লিলি কপেলের দ্য অ্যাস্ট্রোনট ওয়াইভস ক্লাব, মহাকাশে চাঁদের বিস্ময়কে, চাক্ষুষ তুলে ধরবে আপনার চোখের সামনে।

শৈল্পিক চন্দ্র অনুপ্রেরণা: আপনার ভেতরের শিল্পীকে জাগিয়ে তুলে, চাঁদ দিবস উদযাপন করুন। চাঁদের আলোকে মনে করুন, আপনার স্বর্গীয় গয়না। ছবি আঁকুন, গান গেয়ে দেখুন, এইভাবেই আজ আপনার সৃজনশীলতাকে চাঁদের মতো উজ্জ্বল হতে দিন।