লকার ভেঙে সোনা–গয়না লুঠ, গৃহস্থের নববধূর উদ্দেশে চিঠি লিখল চোর জলপাইগুড়িতে

বাড়িতে চোর ঢুকে লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে সোনার গয়না থেকে নগদ টাকাও। এই চুরির ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগও জানানো হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, বাড়ির খাটের উপর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটা চিঠি। আর সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে লেখা রয়েছে বেশ কিছু রাজনৈতিক কথা এবং অবশেষে হুমকি। পাঁচ মাস আগে বিয়ে হয়ে বাড়িতে এসেছে নতুন বউ। আর তাঁর জন্য চিঠি লিখে রেখে গিয়েছে চোরেরা। এই চুরির ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির মাগুরমারি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ আলতা গ্রামে।

এমন ঘটনা আগে কখনও চোরেরা ঘটায়নি। আলতা গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সরকার এই ঘটনায় হতবাক। সোমবার মাঝরাতে তাঁর বাড়িতে চুরি হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, মাঝরাতে ঘরে ঢোকে চোর। তবে বাড়ির গেটে তালা যেমন থাকার তেমনই ছিল। তাহলে কেমন করে ঘরের মধ্যে চোর ঢুকল?‌ উঠছে প্রশ্ন। খোলা জানালা দিয়েও চোর ঢুকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সকালে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘরের আসবাবপত্র, জামাকাপড় ছড়িয়ে পড়ে ছিল। আলমারির লকার ভাঙা। আর সেখান থেকেই সোনা, নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোর। লকারে এক ভরি সোনার গয়না ছিল।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌চার বিধায়কের শপথ হল ন্যাচরাল জাস্টিস’‌, রাজ্যপালকে পাত্তা না দিয়ে মন্তব্য অধ্যক্ষের

এরপরই চোখে পড়ে চোরেদের লেখা চিঠি। এই চিঠি আরও কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। চিঠি কেন লিখে গেল চোরেরা?‌ এই প্রশ্ন মনে জাগছে। এমনকী ওই চিঠিতে তিনদিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি রয়েছে সেই চিঠিতে। চিঠিতে লেখা আছে, ‘‌নির্বাচনে ভোট জায়গা মতো দেননি। তার শাস্তি হল এটাই। আমি পার্টির ছেলে। মেরে দেবো আপনার ছেলেকে। সবাইকে শেষ করে দেব। আমি জেল ফেরত আসামী পার্টির লোক। যদি পরিবারকে বাঁচাতে চান, তাহলে ছেলে ও ছেলের বউকে গ্রামের বাইরে পাঠিয়ে দিন। আর সেটাও সারাজীবনের জন্য। গ্রাম ছাড়তে হবে ছেলে ও ছেলের বউকে। না হলে প্রাণ যাবে’।

কিন্তু নববধূর অন্যায়–অপরাধ কী?‌ সেটাই বুঝতে পারছেন না সরকার পরিবারের সদস্যরা। এই ঘটনা এবং ওই চিঠি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আর তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। চোরের এমন কীর্তিতে অবাক এলাকার বাসিন্দারা। এটা নিয়ে এখন জোর চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‌ঘরে ছেলে ও ছেলের বউ ছিল। সোনার কানের দুল, গলার হার নিয়ে গিয়েছে। আর চিঠিতে লেখা হয়েছে বাড়ির বউকে বাড়ি থেকে অন্যত্র রাখতে হবে। ছেলেকেও তাই।’‌