সায়ন্তিকা–রেয়াতকে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল, জরিমানার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফোঁস করলেন বোস

আজ, সোমবার সবে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন সদ্য নির্বাচিত চার বিধায়কের শপথ মঙ্গলবার হবে। তার মধ্যেই এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের চিঠি গেল সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারের কাছে। তাঁরা জিতেছেন যথাক্রমে বরাহনগর এবং ভগবানগোলা থেকে। তারপর শপথ নিয়ে টালবাহানা তৈরি হয়। বিধানসভায় ধরনায় বসেন তাঁরা। তারপর অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান। এবার এটাকেই অসাংবিধানিক, বেআইনি বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল। তাঁদের শপথ অসংবিধানিকভাবে হয়েছে বলে চিঠি লিখে জানিয়েছেন রাজ্যপাল।

এদিকে আজ থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। প্রথমবার বিধায়ক হিসেবে এই অধিবেশন থেকে এগিয়ে যাওয়ার কথা সায়ন্তিকা–রেয়াতদের। কিন্তু তার আগে আবার জটিলতা তৈরি করল রাজ্যপালের চিঠি। এই দুই বিধায়ককে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপাল জানান, এই শপথ বেআইনি। অধিবেশনে যোগ দিলে জরিমানা করা হবে। সংবিধানে সেই নিয়ম আছে। এই তথ্যের সঙ্গে ধারাও উল্লেখ করেছেন সিভি আনন্দ বোস। চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, স্পিকারের এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালকে এড়িয়ে শপথবাক্য পাঠ করানোর। কে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন সেটা সায়ন্তিকা ও রেয়াতের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। রাজ্যপালের নির্দেশ অনুযায়ী, যদি ডেপুটি স্পিকার শপথবাক্য পাঠ না করান সেক্ষেত্রে তা অসাংবিধানিক।

আরও পড়ুন:‌ নির্বাচিত চার বিধায়কের শপথের দিনক্ষণ জানালেন স্পিকার, সংঘাতের পথে বিধানসভা

অন্যদিকে রাজভবন বনাম বিধানসভার সংঘাত যে অব্যাহত রইল তা এই চিঠি থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল রাজ্য–রাজনীতিতে। রাজপালের পক্ষ থেকে চিঠিতে এও লেখা হয়েছে, বিধানসভার পক্ষ থেকে যে নিয়মের কথা বলা হচ্ছে, সেটা সংবিধানের উপরে নয়। সেদিক থেকে আইন অনুযায়ী, স্পিকার যে শপথ করাচ্ছেন সেটা বেআইনি। সঠিক পদ্ধতিতে শপথ না নিয়ে কেউ অধিবেশনে যোগ দিলে তাঁকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। সঠিকভাবে শপথ ছাড়া কেউ বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিলে বা ভোটাভুটি এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে যোগ দিলে সেটা অবৈধ হিসাবে গণ্য হয়।

এছাড়া এরপরও যদি এই দুই বিধায়ক বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেন তাহলে তাঁদের ৫০০ টাকা করে জরিমানা হতে পারে। চিঠিতে এই কথাও লিখেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই চিঠির কথা স্পিকারকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার চার বিধায়কের শপথ আছে। তার আগে এই চিঠি বেশ চাপে ফেলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর পরে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বিধানসভার অধিবেশন চালু আছে। রাজ্যপালের চিঠি তাই এক্ষেত্রে মান্যতা পেতে পারে না। রুলস অফ বিজনেসের ২ নম্বর অধ্যায়ের ৫ নম্বর ধারা মেনেই শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে সায়ন্তিকা–রেয়াতকে।