‘‌অভিষেক কিন্তু কাঁচি দিয়ে লেজ কুচ করে কেটে দেবেন’‌, সতর্কবার্তা দিলেন তৃণমূল বিধায়ক

একসপ্তাহ আগে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে শুদ্ধিকরণের বার্তা দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসকে বিত্তবান নয়, বিবেকবানদের দল হতে হবে বলে জোর সওয়াল করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একাধিকবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও শোনা গিয়েছে একই কথা। এবার শীর্ষ নেতৃত্বের কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল অশোকনগরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর কণ্ঠে। সকলকে এবার ‘সমঝে’ চলার পরামর্শ দিলেন তিনি। যা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে প্রবল চর্চা শুরু হয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তথা বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসে কোনও সমাজবিরোধীর প্রয়োজন নেই।

এখানেই বিষয়টি থেমে থাকেনি। আমডাঙার আওয়াল সিদ্দি চৌমাথায় এক রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে যোগ দেন বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে অশোকনগরের বিধায়ক বলেন, ‘‌সবাই খারাপ বলছি না। দু’‌একজন যদি এমন থাকে তাঁদের জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ময়দানে নেমে পড়েছেন। আপনি পুজো সদস্য বা পঞ্চায়েত সদস্য যাই হোন। আপনার লেজ ফুলে মোটা হয়ে গিয়েছে। কেউ কাটতে পারবে না। অভিষেক কিন্তু কেটে দেবেন। তখন মা বলার সময় পাবেন না। সুতরাং মানুষের অধিকার, মানুষকে দিতে হবে। তা না করলে লেজ মোটা হলে কেটে দেবেন অভিষেক।’‌

আরও পড়ুন:‌ তিস্তার জল বইছে সেতুর উপর দিয়ে, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দার্জিলিং–কালিম্পং, আতঙ্ক

একদিকে বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় অপরদিকে বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী—এই দুই নেতার কথায় এখন প্রবল চর্চা শুরু হয়েছে। সদ্য রাজ্যে কিছু নিগ্রহের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। বারবার ওইসব নিগ্রহে অভিযুক্তের সঙ্গে কোনও তৃণমূল কংগ্রেস নেতার যোগ আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই কারও নাম না করে বিষয়টি নিয়ে ‘কড়া বার্তা’ দেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একটি সভা থেকে সৌগত রায় বলেন, ‘রাজ্য সরকারের যা দৃষ্টিভঙ্গি সেটা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমাদের কোনও সমাজবিরোধীর প্রয়োজন নেই।’‌ আর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অশোকনগরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‌আপনি যদি মনে করেন, পাড়ার হোমরাচোমরা প্রধান হয়েছেন, লেজ মোটা হয়ে গিয়েছে। আর কেউ কাটতে পারবে না সেটা ঠিক নয়। অভিষেক কিন্তু কাঁচি দিয়ে লেজ কুচ করে কেটে দেবেন।’‌

এছাড়া নেতা–কর্মীদের আরও নানা কথা বলে সতর্ক করে দিয়েছেন অশোকনগরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। বাগদায় উপনির্বাচন নিয়ে নারায়ণবাবুর কথায়, ‘‌আমরা ভোট করাতে বাগদায় গিয়েছিলাম। আমি, তৃণাঙ্কুর, পার্থ, রথীন ঘোষ, সুজিত বোস, নির্মল ঘোষ পড়েছিলাম। ঘুরে দেখেছি মানুষের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। সাংগঠনিক কতিপয় কয়েকজন নেতা–জনপ্রতিনিধির উপর মানুষের রাগ আছে। পয়সা খেয়েছে, সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর করেছে। আমরা বলি, এসব চলবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছে জমি দখল করে গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ করে দেব। সাইন বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেস মানে পরিষেবার পার্টি। তাই সমঝে যান। করেকম্মে খাওয়ার জন্য যাঁরা দলে রয়েছেন, তাঁদের দিন শেষ।’‌