কলকাতার অদূরে সালিশি সভার নামে ফের তৃণমূল নেতার দাদাগিরি, যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর

আবারও সালিশি সভার নামে চলল তৃণমূল নেতার দাদাগিরি। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হল। ঘটনাটি রাজারহাট বিষ্ণুপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। আক্রান্ত যুবকের নাম গৌতম সরকার। পঞ্চায়েতের সদস্য রক্তিম কর এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে সালিশি সভার নাম করে যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই যুবক। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

আরও পড়ুন: পরকীয়ায় বাধা, স্ত্রীকে খুন করতে সালিশি সভায় সুপারি কিলার নিয়ে হাজির স্বামী

জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় কাজ করেন ওই যুবক। কিছুদিন আগেই তিনি বাবাকে হারিয়েছিলেন। শুক্রবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান শেষ হয়। যুবক জানান, তাঁর বাবার মৃত্যুতে তিনি এবং তাঁর মা এমনিতেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রয়েছেন। সেই অবস্থার মধ্যেও কোনওরকম মানবিকতা না দেখিয়ে এভাবে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। অভিযোগ, গৌতমের বাড়িতে আসে একদল যুবক। তারাই সালিশি সভার নাম করে জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে রক্তিম করের উপস্থিতিতে তাঁকে মারধর করা হয়। 

যুবকের দাবি, বকেয়া টাকা নিয়ে ওই সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল। তিনি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় কর্মরত হওয়ায় কাজের সূত্রেই অনির্বাণ সরকার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় গৌতমের। অনির্বাণ রাজারহাট দেয়াড়ার বাসিন্দা। অনির্বাণের সাহায্যে এক ব্যক্তিকে ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন গৌতম। কিন্তু, এরজন্য কমিশন নিয়ে বিবাদ তৈরি হয় দুজনের মধ্যে। অনির্বাণকে টাকা মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। এনিয়ে মীমাংসার জন্য রক্তিম নিজের দলীয় কার্যালয়ে সালিশি সভা ডাকেন। সেখানেই গৌতমকে মারধর করা হয়।

গৌতমের কথায়, ‘আমার বাবা সদ্য মারা গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র মানবিকতা দেখানো হয়নি। আমার সঙ্গে এই টাকা নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পর্ক ছিল না। অফিস থেকে ওই ব্যক্তিকে সোমবারের মধ্যে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সময়ের আগেই আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সালিশি সভার কথা শোনা যাচ্ছে। আর এবার কলকাতা লাগোয়া রাজারহাটেই এই ধরনের ঘটনা ঘটল।’ এই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই যুবক। পাশাপাশি, তাঁর ফোন ফরম্যাট করে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

অন্যদিকে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রক্তিম। তিনি জানান, কোনওভাবেই যুবককে মারধর করা হয়নি। আলোচনা চলাকালীন কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করছিলেন ওই যুবক তাই ফোন কেড়ে নিয়ে সেগুলি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। অন্য কিছু ঝামেলা হয়নি।রাজারহাট পাঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর জানান, অন্যায় করলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।