‘‌টক টু মেয়র’‌ অনুষ্ঠানে ফোন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর, আবদার মেটালেন মেয়র, উপকৃত স্কুল

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি—বিখ্যাত হয়ে উঠেছে ‘‌টক টু মেয়র’‌ অনুষ্ঠান। যেখানে পুর পরিষেবার জন্য মানুষজন ফোন করে থাকেন। এমনকী সরাসরি মেয়রকে অভিযোগ জানাতেও এখানে ফোন করেন নাগরিকরা। কিন্তু এই নম্বরে ফোন করার অধিকার কি শুধু বড়দের?‌ ছোটরা ফোন করতে পারে না?‌ এমন সব প্রশ্ন মনে জেগেছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর। বড়রা সবাই ‘‌টক টু মেয়র’‌ অনুষ্ঠানে নানা অভাব–অভিযোগের কথা তুলে ধরেন। ছোটরা সেখান থেকে পিছিয়ে থাকবে কেন? এই প্রশ্ন মনে উঠতেই ফোন করে বসলেন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। মেয়রকে জানাল তার অভিযোগ। যা শুনে মেয়র আর স্থির থাকতে পারলেন না।

শনিবার সন্ধ্যায় শুরু হয় ‘‌টক টু মেয়র’‌ অনুষ্ঠান। সেখানেই বড়দের মতো ছোট্ট মেয়ে শ্রেয়সীও তার আবদার রেখেছিল। একেবারে বড়দের মতো মেজাজেই রিসিভার তুলে হঠাৎ ফোন করল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এই ফোনটি আসে হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী শ্রেয়সী বণিকের কাছ থেকে। আর এমন একটা কণ্ঠস্বর শুনে মেয়র বেশ মনোযোগী হয়ে ওঠেন। তখন ওই ছাত্রী মেয়রকে জানায়, তাদের বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ঠিক মতো পাখা চলে না। ফলে পড়াশোনার সময় খুব গরম লাগে। আর নেই সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাখাও। যার জন্য এই গরমে স্কুলে ক্লাস করতে গিয়ে খুবই কষ্ট হয়। মেয়র ছোট্ট শ্রেয়সীর কথা শুনে নিজেও কষ্ট পান।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌মানুষই আপনাকে চায় না’‌, এক বিজেপি নেতা কে?‌ বিধানসভায় সুর চড়ালেন মমতা

আর তখন ছোট্ট শ্রেয়সীকে কথা দেন তিনি ব্যবস্থা নেবেন। শ্রেয়সীর কথা একেবারে মনের গভীরে গিয়ে লাগে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের। তার কথায় সেদিন আপ্লুত হয়ে পড়েন মেয়র গৌতম দেব। তিনি তাকে কথা দেন শীঘ্রই তাদের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পাখার ব্যবস্থা করবেন তিনি। একজন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সরাসরি মেয়র গৌতম দেবকে টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে ফোন করতে পারে তা কল্পনাও করেননি তিনি। তবে সেই ফোন পেয়ে সময় নষ্ট করেননি মেয়র। গৌতম দেব ছাত্রীকে যে কথা দিয়েছিলেন সেই কথা রেখেছেনও। তাতে উপকৃত হয়েছে স্কুল এবং শ্রেয়সীর সহপাঠীরাও।

রবিবার ছিল ছুটির দিন। সোমবার সকাল হতেই হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে দুটি পাখা নিয়ে নিজেই হাজির হন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে সোজা চলে যান ষষ্ঠ শ্রেণীর সি–সেকশনে। সেখানে গিয়ে দেখা করেন ছোট্ট ছাত্রী শ্রেয়সী বণিকের সঙ্গে। কথা বলেন শ্রেয়সীর সঙ্গে। আর শ্রেয়সীর আবদার রাখতে ওই পাখাগুলি তুলে দেন মেয়র বিদ্যালয়ের হাতে। মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‌আমি খুশি যে এই টক টু মেয়র স্বার্থকতা পেয়েছে। বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও সোশ্যাল মাধ্যমকে ব্যবহার করে নিজেদের অসুবিধের কথা জানাচ্ছে।’‌ শ্রেয়সী এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেয়রের আচরণে অভিভূত।