সাংবাদিকদের উপর কীসের বিধিনিষেধ সংসদে?‌ সুর চড়ালেন মমতা, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার

বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সংসদে বিরোধীদের চেপে রাখতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ বারবার তুলেছেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে বেরিয়ে সদ্য এমন অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁকে সেখানে বলতে দেওয়া হয়নি। এই আবহে সংসদে সাংবাদিকদের চলাফেরা বা গতিবিধির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদে সরব হন সাংবাদিকরা। জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে তোলপাড় হয়ে যায়। তবে সেই বিধিনিষেধ বিরোধীদের চাপে তুলে নিতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। আর সেটা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে আজ জানান লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

সংসদে সাংবাদিকরা খবরের উদ্দেশে যান। অধিবেশন চললে সেখানে থাকেন। আর অধিবেশন না চললে সংসদের অন্দরে নানা দফতরে ঘুরে খবর জোগাড় করেন। সেখানে আজ, সোমবার বাদল অধিবেশন শুরুর পর থেকেই সাংবাদিকরা সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, বাংলা থেকে সুর সপ্তমে তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নয়াদিল্লিতে আওয়াজ তোলেন ডেরেক ও’‌ব্রায়েন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওম বিড়লা নিজে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানান, কোনও বাড়তি বিধিনিষেধ আর থাকছে না সাংবাদিকদের উপর।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌এবার আমি ধৈর্য হারাচ্ছি’‌, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ে মৃত ছাত্রের বাৎসরিক শেষে শোক বাবার

সম্প্রতি সাংবাদিকদের গতিবিধির উপর নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। নয়া সংসদ ভবনের প্রবেশপথ পর্যন্ত সাংবাদিকদের ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছিল। সাংসদদের সঙ্গে কথা বলতে হলে নির্দিষ্ট জায়গাতেই থাকতে হবে তাঁদের। এই নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাও হয়েছিল। ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সংসদের মকরদ্বার পর্যন্ত সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারবেন না। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে যায় জাতীয় রাজনীতিতে। তারই প্রতিবাদে আজ, সোমবার বিক্ষোভ দেখান সাংবাদিকরা। প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকেও সংসদের এই বিজ্ঞপ্তির চরম নিন্দা করা হয়েছে।

হঠাৎ সাংবাদিকদের উপর এমন বিধিনিষেধ নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। মোদী সরকার সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে বলে প্রতিবাদ শুরু হয়। প্রতিবাদ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বার্তায় বলেন, ‘‌দিল্লিতে আন্দোলনরত সাংবাদিকদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। ওরা চাইলে আমি নিজে সেখানে যাব।’‌ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’‌ব্রায়েনের বক্তব্য, ‘‌সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দেশে কী হচ্ছে সেটা সকলের জানা উচিত। সংসদকে একটি অন্ধকার চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে। মিডিয়া সংসদ চত্বরে প্রবেশ করবেই। মোদী এবং তাঁর ক্যাবিনেট জরুরি অবস্থার থেকেও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। আমাদের সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের সঙ্গে এমনটা হওয়া উচিত নয়। এটা সেন্সরশিপ ছাড়া কিছু নয়।’‌