‘‌কাগজ কুড়ানির রোল প্লে করলাম’‌, শহরের জঞ্জাল নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করলেন মেয়র

শহর কলকাতাকে পরিষ্কার রাখতে হবে। রাস্তায় যেন কোনওরকম জঞ্জাল পড়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মানুষ যেন পরিষেবা পায়। এই কথাগুলি সম্প্রতি নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তাঁর চোখে পড়া কয়েকটি ঘটনা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন। তবে কলকাতা পুরসভা কাজ করে চলেছিল। যাতে রাস্তাঘাট পরিষ্কার থাকে। কিন্তু এবার জঞ্জাল নিয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা হল খোদ কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়ির কাছেই চেতলা পার্কে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন মেয়র। তখনই তিনি দেখেন, ওই পার্কে অসংখ্য প্লাস্টিক প্যাকেট পড়ে রয়েছে।

এই অবস্থা চাক্ষুষ করার পর ‘‌ইভনিং ওয়াক’‌ বন্ধ রেখে সমস্ত প্লাস্টিক কুড়িয়ে ডাস্টবিনে নিজেই ফেলেন। আর এই কথাই মেয়র ফিরহাদ হাকিম শনিবার কলকাতা পুরসভার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে জানান। তিনি বলেন, ‘ইভনিং ওয়াক করতে গিয়ে অন্যরকম অভিজ্ঞতা হল। তাই ইভনিং ওয়াক বন্ধ রাখতে হল। কাগজ কুড়ানির রোল প্লে করলাম।’ আগে ফোনে এই ধরণের নানা সমস্যা শুনতে হতো মেয়রকে। এবার নিজেই খোদ নিজের এলাকায় এমন দৃশ্য দেখে হতবাক মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এত চেষ্টা করার পরও মানুষ সচেতন হচ্ছে না বলে আক্ষেপ তাঁর।

আরও পড়ুন:‌ আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত চলবে না মৈত্রী এক্সপ্রেস, নিহতের সংখ্যা ১৪৭ দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

শহরের রাস্তা থেকে পার্কে যে নোংরা–আবর্জনা–জঞ্জাল পড়ে থাকছে তা থেকে নানা অসুখ করতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আর পরিত্যক্ত জমি থেকে জঞ্জাল পরিষ্কার করতে কলকাতা পুরসভার যে টাকা খরচ হচ্ছে সেটা সম্পত্তিকরের বিলে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। তার জেরে ভবিষ্যতে সেখানে বাড়ি করতে গেলে সেই টাকা মেটাতে বাধ্য থাকবেন জমির মালিক। মেয়র জানান, প্লাস্টিক দূষণ রুখতে খুব শীঘ্রই অভিযান শুরু করবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এখন কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এলাকায় যে সব রাস্তা তৈরি হচ্ছে তাতে বিটুমিনের সঙ্গে প্লাস্টিক মেশানো থাকছে। আরও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে শহরকে পরিষ্কার রাখতে।

শহর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি আদিগঙ্গার জল পরিষ্কার করার কথাও তোলেন মেয়র। আগামী দু’‌বছরের মধ্যে সেটা হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দেন মেয়র। তাই অনেকগুলি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘এক সময় এই আদিগঙ্গায় আমি সাঁতার কেটেছি। মুখ্যমন্ত্রীও সাঁতার কেটেছেন। ১৯৭৮ সালে ভয়াবহ বন্যায় তখন আদিগঙ্গায় সাঁতার কেটে অনেক মানুষকে উদ্ধার করেছি। একটা সময় আমি নিজে পাড়ার পুকুরে অনেক সাঁতার কেটেছি। এসব কারণে তখন পুকুরগুলিও পরিষ্কার থাকত। কিন্তু এখন আমি আমার মেয়েদেরও বলব না পুকুরে সাঁতার কাটতে। তাই আজ পুকুরগুলির এই হাল।’