Girl saves father: ৮ সশস্ত্র দুষ্কৃতীর সঙ্গে লড়াই, বাঘিনীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে বাবাকে বাঁচাল কিশোরী

৮ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতীর সঙ্গে একাই লড়ল কিশোরী। কার্যত বাঘিনীর মতো দুষ্কৃতীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাবাকে বাঁচাল মেয়েটি। ঘটনাটি ছত্তিশগড়ের মাওবাদী অধ্যুষিত নারায়ণপুর জেলার। হামলাকারীদের কাছ থেকে কুড়ুল ছিনিয়ে নিয়ে দুষ্কৃতীদের পালটা হামলা করে কিশোরী। তার এই রনংদেহী রূপ দেখে কার্যত দুষ্কৃতীরা ভয় পেয়ে পিছু হঠতে বাধ্য হয়। তারফলে দুষ্কৃতীদের হামলা থেকে বাবাকে বাঁচাতে সক্ষম হয় ১৭ বছর বয়সী আদিবাসী মেয়েটি। কিশোরীর বাবাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে দুষ্কৃতী হামলা ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি চত্বরে, রাস্তায় ফেলে মারধর সদস্যদের

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঝাড়াগাঁও গ্রাম। এই গ্রামের জনসংখ্যা মাত্র ৩০০ জন। আহত ব্যক্তির নাম সোমধর কোরাম। তিনি বুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সপ্তম শ্রেণির মেয়েটি সাহস না দেখালে হয়তো তার বাবাকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। শুধুমাত্র মেয়ের সাহসিকতার জন্যই এ যাত্রায় বেঁচে ফিরেছেন সোমধর। যদিও পরিবারের দাবি, এটা মাওবাদী হামলা ছিল। তবে এনিয়ে একমত নয় পুলিশ। ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে এই হামলা বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।

কী ঘটেছিল?

মেয়েটি জানায়, তার বাবা পেশায় একজন কৃষক। সোমবার রাতে তাদের বাড়ির দরজায় কয়েকজন ধাক্কাধাক্কি করে। সবমিলিয়ে তারা আটজন ছিল। তারা মেয়েটির বাবার সঙ্গে দেখা করতে চায়। মেয়েটির কথায়, ‘আমি জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখি তারা মুখোশ পরে আছে। তাদের কাছে কুড়ুল রয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের কাছে বন্দুক ছিল। আমি তাদের কাউকে চিনতে পারিনি। তারা আমাকে আমার বাবার কথা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেই আমি বুঝতে পারি বাবা বিপদে পড়েছেন। তাই আমি জানিয়ে দিই বাবা বাড়িতে নেই। তারা আমাকে একের পর এক আমাকে নানা প্রশ্ন করেছিল। শুধু তাই নয়, ওরা আমাকে হুমকির সুরে বলেছিল আবার ফিরে আসবে।’

মেয়েটি তার পরিবারকে ওই ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানালে তারা আশ্বস্ত করেছিল ভয়ের কোনও কারণ নেই। এর কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে পাশের এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে যায়। কিন্তু, সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পর আটকে ওঠে ওই কিশোরী। সে দেখে ৮ জন তার বাবাকে ঘিরে ধরেছে। এরইমধ্যে একজন সোমধরের বুকে কুড়ুল দিয়ে আঘাত করে। তখন মেয়েটি হামলাকারীদের দিকে ছুটে যায়। তাদের মধ্যে একজন কিশোরীকে লক্ষ্য করে কুড়ুল দিয়ে হামলা করে। কিন্তু, কিশোরী মুহূর্তের মধ্যে তার কাছ থেকে কুড়ুল ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে দেয়। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ওই কিশোরী। তার চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা সেখানে ছুটে আসে। তখন সেখান থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।

তবে তারা মেয়েটিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। নারায়ণপুরের এসপি প্রভাত সিং বলেছেন, পুলিশ খুনের চেষ্টার তদন্ত শুরু করেছে। তবে এটি মাওবাদী হামলা নয় বলে তিনি মনে করেন। এসপি জানান, জমি নিয়ে সোমধরের পরিবারে বিবাদ ছিল। সেই কারণে এই হামলা কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।