অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন হামলার শিকার

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) গণমাধ্যমে এক বিবৃতি পাঠিয়ে জানিয়েছে, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন গত ৫ আগস্ট সোমবার বিকাল ৪টার পর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ‘কিছু ডানপন্থী ধর্মান্ধের’ দ্বারা নির্মমভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছে তার পরিবার।

বিবৃতিতে আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আয়েশা হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর বিগত সরকারের হামলার সমালোচনা করেছিলেন আনোয়ার হোসেন। তিনি ৫ আগস্ট বিকালে ছেলে ও ছেলের বন্ধু এবং সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিতে সপরিবার শাহবাগে যাওয়ার জন্য উত্তরা থেকে রওনা হন। বিমানবন্দরের ঠিক সামনে পৌঁছালে এক ব্যক্তি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের কাছে এসে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি। আপনি সেই অধ্যাপক, যিনি ট্রাইব্যুনালে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) জামায়াতের বিরুদ্ধে ছিলেন। আপনাকে টেলিভিশনে দেখেছি।’

ওই ব্যক্তি আনোয়ার হোসেনকে বিমানবন্দরের উল্টো দিকের একটি সরু গলিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, আরও বেশ কয়েকজন উত্তেজিত লোক চারপাশে জড়ো হয়ে ‘নারায়ে তাকবির’ বলতে থাকেন। আনোয়ার হোসেন জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং তার গলা কেটে ফেলা হবে বলে উল্লেখ করেন একজন। উত্তেজিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তার ওপর হামলা করেন। পরিবারের লোকজন তখন আনোয়ার হোসেনকে হামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি আরও দুজন এসে হামলাকারীদের বাধা দেন। পরে সেখান থেকে আনোয়ার হোসনকে বিমানবন্দরে থাকা সেনা ব্যারিকেডের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। বিমানবন্দরে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে আয়েশা হোসেন বলেন, ‘দেশে এখন একটি সরকারের অনুপস্থিতিতে চরম মাত্রায় অনাচার ও নৈরাজ্য চলছে। এর মধ্যে উগ্র ডানপন্থী জঙ্গি চরমপন্থীসহ স্বার্থান্বেষী মহল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে। ধর্মীয় উগ্রবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানের জন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ব্যক্তি এবং পরিবার, আওয়ামী লীগের নিরপরাধ সদস্য এবং আমাদের স্বাধীনতার অনেক প্রতীকের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে নির্বিচার, নির্মম হামলা চালিয়েছে।’