Bandipur Tiger Viral Images: স্বচ্ছ কাঁচের মতো চোখে নীল বাদামি রং! ভাইরাল বান্দিপুরের বাঘের ছবি

দুই চোখের রং দুই রকম। বয়স হয়েছে অনেকটাই। গাছের শান্তিতে বসেছিল। এমন সময়ে ক্যামেরায় শব্দ। ক্যামেরাবন্দি হয়ে গেল বন্দিপুরের বাঘটি। সেই ছবি এখন তুমুল ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেয়ে বাঘটির এমন দুই রঙের চোখ দেখে নেটিজেনদেরও চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছে।

বেঙ্গালুরু -ভিত্তিক বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফার ধ্রুব পাতিল, এই ক্যাপচারের পেছনের উস্তাদ, বলেছেন, আমি কখনই বিশ্বাস করিনি যে আমি এই বিরল ছবি তুলতে পারব। আমার আসল উদ্দেশ্য ছিল বন্দিপুরে একটি সদ্য জন্ম নেওয়া বাঘের বাচ্চা এবং তার মা, যে মিসেকারি – বা ‘রিসেপশন লেপার্ডট্রেস’ নামে পরিচিত, তাদের ছবি তোলা।

আরও পড়ুন: (Buddhadev Bhattacharya: মরণোত্তর দেহদান প্রয়াত বুদ্ধদেবের, এর আগে জ্যোতি বসু সহ কোন ভারতীয়রা এই কাজ করেছেন?)

কীভাবে এত সুন্দর প্রাণীটির খোঁজ পেলেন পাতিল

বলেছেন, এটি অন্য যে কোনও চিতাবাঘ দেখতে পাওয়ার মতো সাধারণ ছিল। তবে আমি প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলাম যে সে একটি সাধারণ বৃদ্ধ মহিলা চিতা। যখন আমি বাড়ি ফিরে এসে ছবিগুলো প্রসেস করা শুরু করলাম তখনই আমি বুঝতে পারলাম যে চিতাবাঘের আইডিওসিঙ্ক্রাটিক চোখ আছে। তবে, আমি নিশ্চিত ছিলাম যে এটি চোখের ছানির কারণে হয়নি। এটি একটি হেটেরোক্রোমিক মিউটেশন ছিল। এমন বাঘ ভারতে যদিও প্রথম।

এই রোগের কারণে এমন দুইরকম রং

উল্লেখ্য, চোখের রং বহুবর্ণের হলে, তাকে হেটেরোক্রোমিয়া বলা হয়। আর ভারতে চিতাবাঘের চোখে, প্রথমবারের মতো এমন বহুবর্ণ রেকর্ড করা হয়েছে। ফটোগ্রাফারের কথায়, এটি একটি খুব বিরল জন্মগত রোগ, যাকে হেটেরোক্রোমিয়া ইরিডামও বলা হয়।

আরও পড়ুন: (COPD: জীবদ্দশায় সিওপিডি-তে আক্রান্ত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ঠিক কী এই অসুখ?)

ভাইরাল ছবিটি কেমন

কর্ণাটকের বন্দিপুর টাইগার রিজার্ভ থেকে ভাইরাল হয়েছে এই বিরল ছবি। ওয়াইল্ড ফটোগ্রাফার ধ্রুব পাতিল সুন্দর ছবিটি তুলেছেন তাঁর ক্যামেরায়। ছবিটি তোলার পরে ফটোগ্রাফার প্ৰথমে বোঝেননি যে বাঘটির দুই চোখের রং দুইরকম। পরে যখন ছবিটি তিনি ঠিকমতো দেখেছিলেন, চমকে গিয়েছিলেন। কারণ এই চিতাবাঘের একটি চোখের নীল অন্যটি বাদামি। জানা গিয়েছে, ছবিটি নিকন জেড ক্যামেরা এবং জেড৪০০এমএম এফ৪.৫ লেন্স দিয়ে তোলা হয়েছে।

ফটোগ্রাফার ধ্রুব পাতিল তাঁর অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল @dhruvpatil_photography থেকে ২ অগস্ট পোস্ট করেছেন ছবিটি, যা ইতিমধ্যেই হাজার হাজারেরও বেশি লাইক সংগ্রহ করেছে। কমেন্ট সেকশনে নেটিজেনদের উচ্ছাস ধরা পড়েছে। ইনস্টাগ্রামে এই ছবিটি শেয়ার করার সময়, ফটোগ্রাফার ধ্রুব লিখেছেন যে মহিলা চিতাবাঘের একটি পান্না এবং একটি চোখ সোনার। তিনি আরও লিখেছেন যে কাবিনীতে প্রথমে ব্ল্যাক প্যান্থারের মতো মেলানিস্টিক চিতাবাঘ এবং এখন বান্দিপুরে হেটেরোক্রোমিক চিতাবাঘ দেখতে পাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য।

কী বলছেন নেটিজেনরা

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন- বিরল ক্যাচ। অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন যে তিনি বাঘের চোখের বিভিন্ন রং পছন্দ করেছেন।

আরও পড়ুন: (Olympic 2024: অলিম্পিক্সে PIN Trading কী? প্রায় চার দশক ধরে চলে আসছে এই ট্র্যাডিশন)

বন্দিপুর জাতীয় উদ্যান-

পাতিল বলেছেন, বান্দিপুর একটি অবিশ্বাস্য জাতীয় উদ্যান। এটি চিতাবাঘের আশ্রয়স্থল। এখানকার বাঘ এবং চিতাবাঘের চোয়াল অনেক বড় হয় কারণ টপোগ্রাফিতে অনেক উচ্চতা রয়েছে যার জন্য আরোহণের শক্তি প্রয়োজন। সব মিলিয়ে বন্দিপুরে অনেক কিছু অন্বেষণ করার আছে।

ফটোগ্রাফার হওয়ার জার্নি সম্পর্কে পাতিল

পাতিল ১০ বছর বয়সেই বন্যপ্রাণী ওয়াইল্ড তার যাত্রা শুরু করেছিলেন। বাড়ির কুকুর ছবি তোলা থেকে শুরু হয়েছিল যাত্রা। পাতিলের কথায়, আমার মা আমাকে ইনস্কিপ ভাইদের দ্বারা বার্ডস অফ ইন্ডিয়া বইটি দিয়েছিলেন। আমি বিভিন্ন প্রজাতি সম্পর্কে পড়া এবং তারপর আসলে তাদের কেমন দেখতে এবং আমার মায়ের ক্যামেরা দিয়ে তাদের ক্যাপচার করা ছবি দেখে আকর্ষণ অনুভব করেছি। ২০১৩ সালে যখন আমার বয়স ১০, আমি আমার মায়ের ক্যামেরা নিয়ে কাবিনীতে গিয়ে গিয়েছিলাম প্রথমবার। সেই প্রথমবারের মতো, আমি তিনটি চিতাবাঘ দেখলাম। তাদেই ট্র্যাক করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করা গাইডদের সঙ্গে ৩ দিন কাটিয়েছি। আমি জঙ্গলের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।

ধ্রুবের কথায়, দিন দিন আরও প্রজাতি বিপন্ন হওয়ার সক সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে তা ভয়ঙ্কর। আমি বিশ্বাস করি ক্যামেরা আমার কলমের মতো, এমন একটি কলম যা আমার প্রজন্মের মানুষের কাছে, আমি যে প্রাণীদের সঙ্গে বড় হয়েছি তাদের প্রেমে পড়ার জন্য প্ররোচিত করতে পারে।