‘‌এখানে গণধর্ষণ হয়েছে’‌, মৃত আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকের বাড়িতে টুম্পা– মৌসুমী

মহিলা চিকিত্‍সককে ধর্ষণ–খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ চলছে আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে। এই আবহেই আজ, রবিবার হাসপাতালে গেলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। যে সেমিনার হলে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে পৌঁছলেন তিনি। নগরপালের সঙ্গেই ঘটনাস্থলে এলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং সেমিনার হল পরিদর্শন করলেন নগরপাল। এই আবহে মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাড়ি পৌঁছেও তাঁর মা–বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না কামদুনি আন্দোলনের দুই মুখ—মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল। নেপথ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের হাত থাকার অভিযোগ।

এদিকে আজ, রবিবার পারলৌকিক কাজ মিটেছে নির্যাতিতা মৃত ডাক্তারের। এদিন তাঁর সোদপুরের বাড়িতে বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কামদুনির প্রতিবাদী মৌসুমী কয়াল। এদিন তিনি নির্যাতিতার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‌এই পরিবারে পাশে আমরা আছি। আমরা আবার আরেক দিন আসব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন প্রলোভনে পা দেবেন না।’‌ মৃতার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। আজই তদন্তের অগ্রগতির খবর জানাতে মৃতার বাড়িতে যান জয়েন্ট সিপি।

আরও পড়ুন:‌ আরজি কর হাসপাতাল পরিদর্শনে পুলিশ কমিশনার, জরুরি বিভাগ, সেমিনার হলে সিটের সদস্যরা

অন্যদিকে টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়াল–সহ বেশ কয়েকজন মৃতা চিকিৎসকের বাড়িতে ঢুকতে বাধা পায় বলে অভিযোগ। যদিও মৌসুমী কয়াল জানান, মৃতার বাবা–মা কাজে ব্যস্ত। আর তাঁদের কথা বলার মতো মানসিক অবস্থাও নেই। তবে সামান্য কথা হয়েছে। বিস্তারিত কথা বলতে আরেকদিন তাঁরা সোদপুর আসবেন। টুম্পা কয়ালের বক্তব্য, ‘‌বাবা–মার কোল থেকে সন্তান চলে গেলে যে বেদনা, সেটা আমরা কখনও ভাগ করে নিতে পারব না। মেয়েটির কাকা আমাদের বললেন, আজ বাদ দিয়ে কাল বা পরশু এলে ওর বাবা–মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের চক্রান্ত। কারণ, আমরা যখন ঢুকি এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সেখানে ছিলেন। এখন হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যাতে না ঢুকতে দেয়।’‌

এছাড়া মৃতার বাড়িতে জয়েন্ট সিপি এসে পরিবারের যাবতীয় দাবি নোট করে নিয়ে যান। পুলিশের আশ্বাস, দোষী শাস্তি অবশ্যই পাবে। আর পুলিশের পক্ষ থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের কপিও তুলে দেওয়া হয়। আর মৌসুমী কয়ালের কথায়, ‘‌যে চিকিৎসক মানুষের জীবন দান করেন, যাকে আমরা ভগবানের আসনে বসাই, আমরা ভাবি ডাক্তার একজন ভগবান। হাজার মানুষের জীবন দান করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে আজ ওঁকেই জীবন দিতে হল। এর মতো লজ্জার ঘটনা নেই। আমরা চাই, নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। এখানে একজন ধর্ষণ করেনি। এখানে গণধর্ষণ হয়েছে।’‌ পাল্টা পানিহাটির তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেছেন, ‘‌বাড়ির মা–বাবা দেখা না করতে চাইলে আমাদের কী করার আছে? অর্বাচীনের মতো কথা বললে তার কোনও জবাব হয় না।’‌