এ বছর ৮ টেস্টের সবগুলো খেলবেন সাকিব

সাকিব আল হাসান কখন কোন সিরিজ খেলবেন, সেটি আগে থেকে বলা খুব মুশকিল! কোনও সিরিজের জন্য দল ঘোষণার আগে তার কাছ থেকে মতামত নিয়ে স্কোয়াড সাজাতে হয় নির্বাচকদের। এতদিন পর্যন্ত এটাই হয়ে আসছে। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সবখানেই সংস্কারের কথা উঠছে। বাংলাদেশের নির্বাচক প্যানেলও সেই পথেই হাঁটছে। একটি বা দুটি সিরিজ নয়, চলতি বছরের পুরো সময়টাতে সাকিব টেস্ট খেলবেন কিনা, সেই ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত জেনে নিয়েছেন নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ টেস্টের সবগুলোতেই সাকিব খেলবেন।

চলতি মাসেই পাকিস্তানের সঙ্গে দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ভারতের মাটিতে দুটি টেস্ট খেলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুই ম্যাচ খেলতে নামবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তারপর নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের দেশে খেলবে দুটি টেস্ট। সবমিলিয়ে ৮টি টেস্ট খেলবে চলতি বছর। সবগুলোই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। 

এই টেস্টগুলোতে সাকিব খেলবেন কিনা, সেটি জানতে চেয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক লিপু। সাকিব ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, তিনি সবগুলো টেস্টই খেলবেন।

সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ দল দেশ ছাড়ার আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রধান নির্বাচক লিপু বলেছেন, ‘৮টি টেস্ট ম্যাচ হবে যেটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিয়ে শেষ হবে ডিসেম্বরে। সবগুলোতেই তিনি অ্যাভেইলেবল থাকবেন। এবং তিনি নিয়মিত অনুশীলন সেশনেও থাকবেন। হ্যাঁ, অনুশীলন সেশনে সব খেলোয়াড়, বিদেশি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ইস্যু থাকে। এটা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরাও ভেবেছি, অনেক ইস্যু ছিল। খেলার বাইরে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার নির্বাচন হয়েছে তার খেলার মেধার ক্ষেত্রে। তার মেধার জায়গাটাকে সমুন্নত রেখেছি। আগামীতেও আমি মনে করি মেধাটাকে গুরুত্ব দিতে পারবো।’

শুধু ম্যাচই নয়, সাকিবকে স্কোয়াডে জায়গা পেতে হলে আগামী দিনগুলোতে অনুশীলনে থাকতে হবে। শুধু মুখের কথাতেই আশ্বস্ত হননি লিপু, সাকিবকে মেইল করে সবকিছু জানাতে হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘সাকিবের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। সম্ভবত জুলাইয়ের শেষ দিকে সাকিবের সঙ্গে অনেকদিন পর আমার কথা হয়। তার খোঁজখবর নেই। ৬-৭ তারিখের দিকে আবার কথা হয়। জিম্বাবুয়ে সিরিজের সময় তার সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছিল। কারণ সামনে অনেকগুলো টেস্ট, সেখানে তাকে পাওয়া নিয়ে কথা হয়েছিল। তখন তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে আবার আমাকে এটা জানতে হয়েছে। শুধু ফোন না, ই-মেইলও আদান প্রদান হয়েছে তিনি অ্যাভেইলেবল থাকবেন কিনা। অ্যাভেইলেবলের পাশাপাশি প্রত্যেক সিরিজের আগে যে অনুশীলন সেশন হয় সেখানে তিনি থাকবেন কিনা সেটাও জানার বিষয় ছিল।’

কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় সাকিবকে নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হচ্ছিল। কেউ কেউ বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছিলেন। এইসব কিছু নিয়ে ভাবলেও শেষশেষ সাকিবের মেধার মূল্যায়ন করেছেন নির্বাচকরা। এক প্রশ্নের জবাবে লিপু বলেছেন, ‘সাকিব তার পারফরম্যান্সের আলোকেই যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত পারফরম্যান্স দিয়ে তিনি নিজেকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছেন এবং ভিন্ন সংস্করণে তার যে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা, পাকিস্তানের বিপক্ষে তার রেকর্ড; সব কিছু মিলিয়েই তিনি যাচ্ছেন।’