আরজি কর হাসপাতালে কেমন হামলা হয়েছিল?‌ এবার মুখ খুললেন নিরাপত্তারক্ষী

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ। আর তারই প্রতিবাদে আন্দোলন চলছে রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে। সেই আন্দোলনের মাঝেই মাঝরাতে আরজি কর হাসপাতালে হামলা হয়ে গেল। আর এই ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে উঠে পড়ে লেগেছে কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই ৯ জনের ছবি প্রকাশ করেছে কলকাতা পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে অপরাধীদের ধরার জন্য। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে রাজপথে নেমেছিল নাগরিক সমাজ। আর সেই রাতেই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাঝে আরজি কর হাসপাতালে চলল বহিরাগতদের তাণ্ডব। এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। আর তা নিয়ে এবার রাতের হাড়হিম করা হামলার কথা জানালেন আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী।

ঘড়িতে তখন রাত ১টা। তুমুল হামলা–তাণ্ডব নেমে এল আরজি কর হাসপাতালে। চলল মারধর। বাদ গেল না কেউ। চিকিৎসক থেকে পুলিশ প্রহৃত হলেন। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পুলিশকে অ্যাকশন নিতে বললেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে পুলিশ কমিশনারকে দাবি জানিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। কিন্তু গোটা ঘটনা যিনি দেখেছেন তিনি কিন্তু এই হাসপাতালেরই নিরাপত্তারক্ষী বলেই জানা গেল। আর আজ, বৃহস্পতিবার সকালে স্বাধীনতা দিবসের দিন জানিয়ে দিলেন মাঝরাতে তাণ্ডব–হামলার ঘটনা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়ে, হাসপাতালের চারতলায় ফুসফুস এবং চেস্ট বিভাগের যে সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল সেখানেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এই দাবির প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই সেমিনার রুম ‘সম্পূর্ণ অক্ষত’ আছে। তাহলে ঠিক কী ঘটেছে?‌ আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী প্রণয় দাস সংবাদসংস্থা এএনআই–কে বলেন, ‘‌রাত ১টা নাগাদ ৫০০–১০০০ লোকজন এখানে জড়ো হয়। আমরা গেটে তালা দিয়ে দিই। কিন্তু তারা এই গেট ভেঙে ফেলে। তখন আমরা আর একটা গেটে যাই। সেই গেটও ভেঙে ফেলা হয়। তারা অনেকে ছিল। সেখানে আমরা ১০–১২ জন এবং পুলিশ। তারা চিৎকার করে ওঠে এবং ভাঙচুর শুরু করে। তারা সব কিছু ভেঙে তছনছ করে দেয়। কম্পিউটার, ওষুধ এবং সিসিটিভি ক্যামেরাও ভাঙা হয়।’‌

আরও পড়ুন:‌ যুবতীর উচ্চতা আড়াই ফুট, অন্তঃসত্ত্বার জটিল অস্ত্রোপচার, বর্ধমান মেডিক্যালে সন্তান প্রসব

সুতরাং পুলিশ যে নীরব দর্শক ছিল না সেটা এই ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়। কারও আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে পুলিশের উপরও। এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তখন সবাই পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন একেবারেই নিয়ন্ত্রণে। দোষীদের চিহ্নিত করে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। ডিসি নর্থ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে সেটা ভুল প্রচারের জন্য। কলকাতা পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।’‌