শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে ভাইরাল সেই আ.লীগ নেতা কারাগারে

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবিরকে চাঁদাবাজি মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাহবুব আলম তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০১১ সালে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ হাওলাদারের নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করেন জাহাঙ্গীর কবির। সে সময় চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে লোকজন নিয়ে বাদীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান-দোকানঘর দখল করেন বিবাদী। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দিতে পারেননি ওই বিএনপি নেতা।

মামলার বাদী হারুন-অর রশিদ হাওলাদার বলেন, ‘বরগুনা পৌরসভার সদর রোডে আমার হারুন মোটরস নামে একটি দোকানঘর ছিল। ২০১১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমাকে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে লোকজন নিয়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল করে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে কোনও অভিযোগ করতে পারিনি, তাই এর কোনও সুষ্ঠু বিচারও পাইনি। এখন মামলা করার সুযোগ হয়েছে তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার করা চাঁদাবাজি মামলায় আদালত তাকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। আশা করি, আদালতের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার পাবো।’

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকার একটি পুলিশের টিম ও বরগুনা সদর থানার পুলিশের সহযোগিতায় তাকে বুধবার সকাল ৬টার দিকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার (জাহাঙ্গীর কবির) বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।’

এর আগে, সোমবার (১২ আগস্ট) সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এই নেতা। ফেসবুকে ভাইরাল তিন মিনিটের ফোনালাপে শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীর কবিরকে বলেন, ‘আপনারা শৃঙ্খলা মেনে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে যথাযথভাবে পালন করবেন।’ এ সময় জাহাঙ্গীর কবির শেখ হাসিনাকে বলেন, ‘আপা আপনি ঘাবড়াবেন না। আপনি ঘাবড়ালে আমরা দুর্বল হয়ে যাই। আমরা শক্ত আছি।’

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ঘাবড়াবো কেন? আমি ভয় পাইনি। আপনারা দেখছেন, আমাদের পুলিশ বাহিনীকে মেরে কীভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমাদের কর্মীদের মেরেছে। বোরকা পরে মেরেছে। এ দেশটা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। আপনারা যেভাবে আছেন থাকেন।’