পাল্টানোর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, আলোচনা সভায় বক্তারা

শুধু সংবিধান সংশোধন নয়, সমাজকে পাল্টে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট জনেরা। তারা আহ্বান জানিয়েছেন, সমাজ পাল্টানোর সংগ্রামে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব এবং অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষায় করণীয় প্রসঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রস্তাব শীর্ষক ‘সংস্কার সংলাপ’-এর ২য় পর্ব আয়োজন করে দলটি। এ সংলাপে বিশিষ্ট জনেরা অংশগ্রহণ করেন।  এর আগে গত ১২ আগস্ট একই শিরোনামে প্রথম সংলাপ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

লেখক ও কবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজি বলেন, ‘সংবিধান তো সংস্কার করতেই হবে, তবে শুধু সেটা করলে হবেই না। পাশাপাশি সমাজকে পালটানোর জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘বাংলাদেশ এই প্রথম একটি সরকার পেয়েছে, যে সরকার ছাত্রদের নেতৃত্বে জনতার অভ্যুত্থানের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং যে সরকারে আন্দোলনকারী নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আছে। এই অবস্থায় সকল পক্ষের উচিত হচ্ছে, এই বিজয় এবং ঐক্যকে সত্যিকারের জাতীয় ঐক্যে রূপান্তর করে অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।’

লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন বলেন, ‘রাষ্ট্রের সংস্কারের জন আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের জন্য ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে ১) আইন বিভাগ বা সংসদ, ২) বিচার বিভাগ, ৩) আমলাতন্ত্র বা প্রশাসন, ৪) পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী, ৫) নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, ৬) নির্বাচন ব্যবস্থা, ৭) রাষ্ট্র পরিচালনার আইন-কানুন, ৮) স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ৯) অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, ১০) মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা এবং ১১) ‘সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামো’ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত সংগ্রহের জন্য ‘টাস্কফোর্স গঠন’ এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাথে ‘গণ-আলোচনা’র উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’

লেখক জিয়া হাসান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বাংলাদেশকে একটা নতুন সম্ভাবনার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে যেন সংস্কার করতে গিয়ে স্ট্যাবিলিটি যেন ভেঙে না পড়ে। তিনি বলেন, সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে দ্রুততম সময়ে সংলাপ শুরু করতে হবে।

সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন বলেন, এরআগে আমরা দেখেছি দেশের জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কয়েকজন বিচারকের কলমের খোঁচায় বাতিল করে দিয়েছিল। তাই আমাদের এবারের সংস্কার করতে হবে সরাসরি জনগণের অংশগ্রহণে যাতে কেউ এইটা পরবর্তীতে বাতিল করতে না পারে। আর তার পথ হচ্ছে সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচনের মাধ্যমে গণ-পরিষদ তৈরি করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুশাদ ফরীদি বলেন, আইনের শাসন দেশের সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করবো। বিশেষভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় আইনের শাসন আরও জরুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

আলোচনা করেন, গবেষক আলতাফ পারভেজ, কবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজি, লেখক ও অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুশাদ ফরীদি, ছাত্রনেতা আহমেদ ইসহাক, মাজহারুল ইসলাম, ইউল্যাবের শিক্ষার্থী আসিফ মাহামুদ, কারিকুলাম আন্দোলনের সংগঠক মুসলিম বিন হাই, সংবাদকর্মী সৈয়দ শিমুল পারভেজ, সাংবাদিক আরিফুর রহমান তুহিন, নারীনেত্রী জাকিয়া শিশির, অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান হাসিবুল প্রমুখ।