বহিষ্কৃত মুহতামিমকে পদে বসাতে এসে মার খেলেন ওলামা দলের নেতা

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে একটি কওমি মাদ্রাসার আধিপত্য নিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা জমির উদ্দিনসহ কয়েকজনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৮ আগস্ট) উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের ইউনুছিয়া নুরুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় হামলার ঘটনাটি ঘটে। তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) উপজেলা সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মাহবুবুর রহমানকে বের করে দেয় তৎকালীন শুরা কমিটি। ওই সময় তার স্থলে নিয়োগ দেওয়া হয় মাওলানা আব্দুল খালেককে। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেফাক মীরসরাই উপজেলা সভাপতি ও ওলামা দলের জেলা সভাপতি মাওলানা জমির উদ্দিন বেশ কয়েকজনকে নিয়ে মাদ্রাসায় প্রবেশ করেন।

এরপর ২০১৭ সালে বহিষ্কৃত মুহতামিম মাহবুবুর রহমানকে স্থলাভিষিক্ত করার প্রস্তাব দেন। এ সময় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান জমির উদ্দিনসহ তার সহযোগীরা। পরে স্থানীয় লোকজনসহ একত্রিত হয়ে তাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে।

হামলার শিকার মাওলানা জমির উদ্দিন দাবি করেন, ‘২০১৭ সালে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন মুহতামিম মাওলানা মাহবুবুর রহমানকে মাদ্রাসা থেকে অনৈতিকভাবে বের করে দেওয়া হয় বলে আমরা অভিযোগ পাই। পরে এ বিষয়ে কথা বলতে রবিবার সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে আলোচনার চেষ্টা করলে বর্তমান মুহতামিম আব্দুল খালেকসহ কয়েকশত দুর্বৃত্ত আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেফাক উপজেলা সহ-সভাপতি মাওলানা নুরুল আলম, সদস্য মাওলানা রেজাউল করিম ও চট্টগ্রাম উত্তরজেলা নুরানী তালিমুল কোরআন শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি মাওলানা সাইফুল ইসলামসহ আমি নিজেও আহত হই।’

তিনি দাবি করেন, ‘হামলার সময় তারা আমাকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের লোক বলে চড়াও হয়। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা।’

এ বিষয়ে ওচমানপুর ইউনুছিয়া নুরুল উলুম মাদরাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল খালেক অভিযোগ করেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৭ সালে বহিষ্কৃত হন প্রাক্তন মুহতামিম মাওলানা মাহবুবুর রহমান। রবিবার মাওলানা জমির উদ্দিনসহ কতিপয় লোকজন মাদ্রাসা দখল করতে আসেন। বিষয়টি মাদ্রাসা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হলে এলাকার লোকজন এসে তাদের ধাওয়া করে গণধোলাই দেয়। পরে তারা স্থান ত্যাগ করে চলে যান। পরে মীরসরাই ক্যাম্পে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। বর্তমানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।’