আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে ভুল পোস্ট মুছলেন সুখেন্দু, মামলা ‘বন্ধ’ করতে চায় পুলিশও

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর এই অপরাধের তদন্ত করছে সিবিআই। এই আবহে চলছে জোরদার আন্দোলন। এই ঘটনার পরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে নানা কথা পোস্ট করেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়। লালবাজার দু’‌বার নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠায়। তাতেই চাপে পড়ে যান সাংসদ। আর কলকাতা হাইকোর্টে ছোটেন। আজ, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে ওই পোস্ট ভুল ছিল বলে জানিয়ে দিলেন সাংসদের আইনজীবী। তারপর ওই পোস্ট মুছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। পরে মুছেও দেন।

ধর্ষণ করে খুনের অপরাধ করার অভিযোগে এখন সিবিআইয়ের হাতে আছে সঞ্জয় রায়। তাকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও তল খুঁজে পায়নি সিবিআই। কেটে গিয়েছে একসপ্তাহ। সিবিআই অফিসাররা কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। যা নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে। এই আবহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের নির্দেশ, আপাতত সুখেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। ভুল স্বীকার করে নেওয়ায় মামলা বন্ধ করতে চায় কলকাতা পুলিশ।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌পশ্চিমবঙ্গের সরকার এখন জনগণের বিশ্বাস হারিয়েছে’‌, মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন রাজ্যপাল

জনরোষ তৈরি হচ্ছে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে। গত কয়েক মাস ধরেই হাসপাতালে সঞ্জয় রায়ের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। অধিকাংশ রাতেই সে প্রচণ্ড মদ‌্যপান করে আরজি কর হাসপাতালে ঢুকত। ইচ্ছামতো ঘোরাঘুরি করত হাসপাতালে বলে সূত্রের খবর। এই নিয়ে এখন তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই সুখেন্দুশেখর রায় তাঁর করা বিতর্কিত এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছেন বলে জানান আদালতে। রাজ্যের আইনজীবী অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মামলাকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট ডিলিট করে দেন। ফলে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। এই মামলা পুলিশ এখানেই ক্লোজ করছে।

এছাড়া গত শনিবার এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সিবিআই হেফাজতে নিয়ে জেরা করার পরামর্শ দেন সুখেন্দু। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে তুলে ধরেন তিনি। ওই পোস্টেই কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াড অনেক পরে গিয়েছে বলেও পোস্ট করেছিলেন তিনি। কলকাতা পুলিশ তথ্য দিয়ে প্রমাণ দেয় সুখেন্দুশেখর রায়ের পোস্ট ভুল। তারপর তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় লালবাজারে। এরপর আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ জানান, দু’‌পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই আদালত আপাতত এই মামলায় হস্তক্ষেপ করছে না। তবে বুধবার মামলার শুনানি থাকছে। রাজ্য তাদের রিপোর্ট দেবে আদালতে।