আন্দোলনে গিয়ে নিখোঁজ, ১৬ দিন পর মর্গে মিললো আটটি গুলিবিদ্ধ লাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে ৪ আগস্ট নিখোঁজ হন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চর কামারিয়া গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান (৩০)। ৩ আগস্ট স্ত্রীর সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। এরপর থেকে সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার। ১৬ দিন পর রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে মর্গে অজ্ঞাতনামা হিসেবে পড়ে ছিল তার লাশ। সোমবার শনাক্তের পর তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। মঙ্গলবার গফরগাঁওয়ের চর কামারিয়া গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। নিহত কামরুজ্জামান ওই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মো. আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টর এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে প্রাইভেটকার চালাতেন কামরুজ্জামান। পাশাপাশি প্রবাসে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ৩ আগস্ট রাতে স্ত্রী সামিরা জাহানের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। ৪ আগস্ট আন্দোলনে অংশ নেবেন বলে স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। ওই দিন দুপুরে উত্তরা এলাকায় গুলিতে নিহত হন। তখন থেকে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অজ্ঞাত হিসেবে মর্গে পড়ে থাকে। স্বজনরা কোথাও না পেয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করেন। 

কামরুজ্জামানের শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মর্গে পড়ে থাকা মরদেহের আঙুলের ছাপ মিলিয়ে পরিচয় শনাক্তের পর সোমবার আমাদের খবর দেয় পুলিশ। পরে মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করি। রাতে লাশ বাড়িতে এনে মাথা ও শরীরে আটটি গুলির চিহ্ন পাই। পরে তাকে দাফন করি।

কামরুজ্জামান দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা ছিলেন। মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে, বড় ছেলে প্রথম শ্রেণিতে ও ছোট ছেলের বয়স ছয় মাস। বাবার জন্য কাঁদছে তারা।

শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভগ্নিপতির এমন মৃত্যুতে পুরো পরিবার শোকাহত। তার বাবা প্রবাস থেকে কয়েক দিনের মধ্যে ফিরবেন। এরপর আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন। কামরুজ্জামান কোনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। প্রাইভেটকার চালিয়ে সংসার চালাতেন। তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।