বন্যায় বিদ্যুৎহীন ১২ লাখ গ্রাহক, ক্ষতি সাড়ে ৮ কোটি টাকার বেশি

এখনও দেশের সাতটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। সাত নদীর মধ্যে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রায় ১২টি স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপরে। বন্যায় ডুবে গেছে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বেশিরভাগ জায়গা, বন্ধ আছে ২১টি উপকেন্দ্র। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে ওই অঞ্চলের ১১টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ১১ লাখ এবং পিডিবির প্রায় ৯৭ হাজার গ্রাহক।

পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (আরইবি) জানায়, বন্যায় তাদের অধীন ১২টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের হিসেবে জানা যায়, দেশের ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৯৬ জন গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর মধ্যে চাঁদপুরে ১-এ ৫ হাজার ৩৫০ জন, নোয়াখালীতে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭০০ জন, ফেনীতে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৪৬ জন, লক্ষ্মীপুরে ২০ হাজার জন, কুমিল্লা ২-এ ৭৫ হাজার জন, কুমিল্লা ৪-এ ১ লাখ ৯০ হাজার জন, চট্টগ্রাম ১-এ ২ হাজার জন, চট্টগ্রাম ৩-এ ৫০ হাজার জন, কক্সবাজারে ৫০০ জন, মৌলভীবাজারে ৪২ হাজার জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৫ হাজার জন গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে।

মোট ১৭৪টি উপকেন্দ্রের মধ্যে ২১ হাজার ৯০৮টি ১১ কেভি ফিডারের মধ্যে বন্ধ আছে ২০৮টি। ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসেবে জানানো হয়, মোট ২৮৭ লাখ ৬ হাজার টাকার ৭১৯টি বৈদ্যুতিক খুঁটি, ২৪৬ লাখ টাকার ৩২৮টি ট্রান্সফরমার, ১৬৯ দশমিক ১১ লাখ টাকার ২ হাজার ২২৫টি স্প্যান ছিঁড়েছে, ২ দশমিক ১৯ লাখ টাকার ৩১৯টি ইন্সুলেটর, ৯০ লাখ টাকার ৭ হাজার ৪৯৯টি বিদ্যুতের মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা৷

ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে ফেনীর হিসাব নেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ সেখানকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসই বন্ধ আছে৷

এদিকে পিডিবি জানায়, বন্যায় তাদের অধীনে চৌদ্দগ্রামের ৩৩/১২ কেভি উপকেন্দ্রটি বন্ধ আছে। এক কেন্দ্রের ৩৩ কেভি ফিডার ১টি এবং ১৭টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ আছে। চৌদ্দগ্রাম ছাড়া কুমিল্লা, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চৌমুহনীর বিদ্যুৎ অফিসের অধীনের ৯৭ হাজার গ্রাহক এখন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে ৯টি ট্রান্সফরমার এবং ৪৪টি মিটার পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ এছাড়া ৩ কিলোমিটার ৩৩ কেভি লাইন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি লাইন, ১৮ কিলোমিটার ১১/০.৪ কেভি লাইন, ১৭ কিলোমিটার ০.৪ কেভি লাইনের ক্ষতি হয়েছে।  সব মিলিয়ে পিডিবি জানায়, তাদের মোট ক্ষতি প্রাথমিক হিসেবে ৬০ লাখ টাকা৷

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, আমরা বন্যার পানি মনিটরিং করছি৷ পানি কমতে শুরু করলে কাজের চেষ্টা করবো। পানি নেমে গেলে লাইন চেক না করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। নিরাপত্তাজনিত কারণেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।