‘‌৩৬ ঘণ্টা কাজ করা নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন’‌, এবার জুনিয়র ডাক্তারদের সহমর্মিতায় প্রধান বিচারপতি

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় রাজ্য সরকার এবং পুলিশের ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। আজ, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সুতরাং বাংলার সরকার বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে। পুলিশের কৃতিত্ব বলতে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করার ঘটনা। এই আবহে এবার আজ, বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের ৩৬ ঘণ্টা কাজ করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। একদিন হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসকদের কঠিন পরিশ্রম দেখেছিলেন বলে জানান তিনি।

আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে যখন চর্চা তঙ্গে উঠেছে তখন সিবিআইয়ের দুয়ারে বারবার হাজির হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁকে আজও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই আবহে সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে আরজি কর হাসপাতালের চারজন চিকিৎসক পড়ুয়াকেও শিয়ালদা আদালতে নিয়ে যায় সিবিআই। তাঁদেরও পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত সেটারও অনুমতি দিয়েছে। আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালীন এক আইনজীবী জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের এত দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয় যে তাঁরা শারীরিক বা মানসিকভাবে কোনও সামান্য নিগ্রহ পর্যন্ত রোখার অবস্থায় থাকেন না। সেখানে যৌন হেনস্থা তো অনেক বড় ব্যাপার।

আরও পড়ুন:‌ সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে শিয়ালদা আদালতে সিবিআই, গোপন জবানবন্দি নাকি পলিগ্রাফ পরীক্ষা?‌

তবে আজকে নিয়ে টানা সপ্তম দিন সন্দীপ ঘোষ হাজিরা দিলেন সিবিআই দফতরে। এখন সন্দীপ ঘোষ স্বাস্থ্য ভবনের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি পদে রয়েছেন। আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‌চিকিৎসকদের বলুন, ৩৬ ঘণ্টা কাজ করা নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। আমাদের সকলের পরিবারের সদস্যরাই সরকারি হাসপাতালে যান। আমার এক আত্মীয় যখন অসুস্থ ছিলেন তখন আমি হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে থেকেছি। তখন চিকিৎসকদের কাজ খুব কাছ থেকে দেখেছি। ৩৬ ঘণ্টা কাজ কোনওভাবেই ভাল নয়। এই বিষয়টি নিয়ে অনেক ইমেল পেয়েছি। জুনিয়র ডাক্তারদের ৪৮ ঘণ্টা, ৩৬ ঘণ্টা টানা ডিউটি ঠিক নয়।’‌

ইতিমধ্যেই সিবিআই সন্দীপ ঘোষ এবং চার জুনিয়র ডাক্তারদের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা নিয়ে আবেদন জানায় সিবিআই। আজ আবার আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‌আগে নিশ্চিত করুন সমস্ত ধর্মঘটী চিকিৎসক কাজে যোগদান করছেন। তারপর আমরা নিশ্চিত করব যাতে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা না হয়।’‌ এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না করার জন্য আবেদন করেন প্রধান বিচারপতি। আর বলেন, ‘‌সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বুঝতে হবে এটা রাজনীতি করার বিষয় নয়।’‌