বন্যার মাঝেই জন্ম, শিশুর নাম রাখা হলো প্লাবন

বন্যায় বসতঘর প্লাবিত হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিলেন নারগিস আক্তার। হঠাৎ প্রসববেদনা শুরু হলে এগিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবীরা। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। তারপর স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয় ফুটফুটে পুত্র সন্তান। স্বেচ্ছাসেবীরা নাম রাখেন ‘প্লাবন’।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অবস্থায় নারগিস আক্তারের প্রসববেদনা ওঠে। তারপর স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে তাকে দ্রুত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আলোর মুখ দেখে নবজাতক। শনিবার (২৪ আগস্ট) মা-সহ ওই নবজাতকের ঠাঁই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ধর্মপুর ইউনিয়নের বজু কারিগরের বাড়ির আব্দুর রহমানের স্ত্রী নারগিস আক্তার। বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় তারা। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় নবজাতকের জন্ম হওয়ায় তার মায়ের অনুরোধে নাম রাখা হয় আজমাইন রহমান প্লাবন।

দিনমজুর আব্দুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রীর কঠিন সময়ে শিক্ষার্থী মামারা আমার স্ত্রীর পাশে ছিলেন। তাদের সহযোগিতায় আমরা এখনো আছি। আমার ছেলে সুস্থ আছে। তাই তাদের দেওয়া নামটিই আমরা রাখবো। স্মৃতি হয়ে থাকবে আমাদের কাছে। ছাত্র মামাদের ধন্যবাদ জানাই।

প্লাবনের মা নারগিস আক্তার বলেন, আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা হলে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। আমাকে আর আমার বাচ্চাকে আদর করে। তাদের কথা আমরা সব সময় স্মরণ রাখবো। আল্লাহ তাদের ভালো করুক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না ফেরদৌস তাম্মী ও জেবাইদা খানম মারিয়া বলেন, আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করার সময় নারগিস আক্তারের প্রসব বেদনার খবর পাই। আমাদের ছেলে বন্ধু নাহিদ ও শাহীনুরের মাধ্যমে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আলহামদুলিল্লাহ আজকে আমার হলে তাদের নিয়ে এসেছি। বাবুটার একটা নাম আমরা দিতে পেরেছি। আমাদের ভালো লাগছে। শিশুটার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ থাকবে ইনশাআল্লাহ।

নোয়াখালীর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আখিনূর জাহান নীলা বলেন, শিক্ষার্থীরা খুবই ভালো কাজ করেছে। তারা প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে যারা থাকেন তাদের মাঝে সরকারি সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সেখানকার শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অনেক আন্তরিক। তারা নিজেরা বন্যায় কষ্ট পাওয়া মানুষের পাশে আছে।



বাঁধন/সিইচা/সাএ