এখনও বিদ্যুৎহীন ৮ লাখ  

বৃষ্টি কমে আসায় পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।  কিন্তু এখনও দেশের ছয় নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বন্যাকবলিত এলাকায় আরইবির ১১টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং পিডিবির  ৫টি বিদ্যুৎ অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুই বিতরণ কোম্পানির বন্ধ আছে মোট ১৫টি  উপকেন্দ্র, যা গতকাল শানবার ছিল ১৮টি। রবিবারের হিসাবে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে আরইবির প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৪৬ জন, যা শনিবার ছিল ৯ লাখ ২৪ হাজার ২৬৬ জন। এতে বোঝা যায়, বিদ্যুৎ সরবরাহও বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে  পিডিবির অধীনে রবিবার বিদ্যুৎহীন আছে ২৩ হাজার ৪০০ জন, যা শনিবার ছিল ৪৩ হাজার গ্রাহক। সব মিলিয়ে রবিবার ৮ লাখ ৪ হাজার ১৪৫ গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎ বিহীন রয়েছেন। 

পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (আরইবি) জানায়— বন্যায় তাদের অধীন ১১টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের হিসাবে জানা যায়—  পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর মধ্যে চাঁদপুরে ১-এ শনিবার বিদ্যুৎহীন ছিল ৫০০, আজ তা কমে ১৪৫ জন, নোয়াখালীতে শনিবার ছিল ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ জন, আজ ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ জন, ফেনীতে শনিবার ছিল ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৪৬ জন, আজ ৪ লাখ ৮ হাজার, লক্ষ্মীপুরে শনিবার ছিল ২৫ হাজার জন, আজ তা বেড়ে ৪৫ হাজার হয়েছে। অর্থাৎ এই এলাকায় নতুন করে বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ঝুঁকি বিবেচনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। এদিকে কুমিল্লা ২-এ  শনিবার ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৮০ জন, আজ তা ৮২ হাজার,  কুমিল্লা ৪-এ শনিবার ছিল ২০ হাজার, আজ ৯ হাজার, চট্টগ্রাম-২ এ শনিবার ছিল ৮ হাজার, আজও ৮ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ হীন, চট্টগ্রাম ৩-এ ছিল ৭০ হাজার, আজ ৬০ হাজার,  কক্সবাজারে শনিবার ছিল ১৪০ জন, আজ ১০০, মৌলভীবাজারে শনিবার ছিল ৫ হাজার, আজ ৫০০ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শনিবার ছিল ৩ হাজার ৫০০ জন, আজ ১ হাজার ৫০০ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে।

এদিকে মোট ১৭৪টি উপকেন্দ্রের মধ্যে আজ বন্ধ আছে ১৫টি, শনিবার বন্ধ ছিল ১৭টি। ১১ কেভি ফিডারের মধ্যে বন্ধ আছে আজ ১৪টি, শনিবার বন্ধ ছিল ১৬০টি।

এদিকে পিডিবি জানায়, বন্যায় তাদের অধীনে সুলতানপুর ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রটি বন্ধ ছিল, আজ সব উপকেন্দ্র চালু হয়েছে। ৭টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ আছে। চৌদ্দগ্রাম ছাড়া কুমিল্লা, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চৌমুহনীর বিদ্যুৎ অফিসের অধীনের ২৩ হাজার ৪০০ জন গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎহীন, যা শনিবার ছিল ৪৩ হাজার। এরমধ্যে ৯টি ট্রান্সফরমার এবং ৪৪টি মিটার পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ এছাড়া ৩ কিলোমিটার ৩৩ কেভি লাইন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি লাইন, ১৮ কিলোমিটার ১১/০.৪ কেভি লাইন, ১৭ কিলোমিটার ০.৪ কেভি লাইনের ক্ষতি হয়েছে।  সব মিলিয়ে পিডিবি জানায়, তাদের মোট ক্ষতি প্রাথমিক হিসাবে ৬০ লাখ টাকা৷

পিডিবি জানায়, সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি মনিটরিং করতে জোনাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। গ্রাহককে জরুরি সেবা দিতে হট লাইন চালু করা হয়েছে, দফতরগুলোর পরিস্থিতি মনিটরিং করতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে, প্রতিটি দফতরে বন্যা প্লাবিত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ মনিটরিং কমিটি গঠন, প্রতিটি দফতরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে স্পেশাল কারিগরি টিম গঠন, বন্যার পানি যথাযথ পরিমাণ কমে গেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে প্রতিটি দফতরে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ মালামাল (তার, পোল, ট্রান্সফরমার,  ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক মালামাল) জমা করা হয়েছে।