ফারাক্কার ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত

ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেটের সবগুলোই খুলে দিয়েছে ভারত। বিহারের গঙ্গায় পানির স্তর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কার এই গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভারত সরকার।

গত কয়েক দিন ধরেই বড় ধরনের বন্যায় ভাসছে বাংলাদেশের ১১টি জেলা। দেশের পূর্বাঞ্চলে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই ১১ জেলায় ৫৭ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের এই বন্যার জন্য বিভিন্ন জন ভারতকে দায়ী করছেন। বলা হচ্ছে, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে এই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এবার ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কিনা এরকম শঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি ডেঞ্জার লেভেল পার করায় ছাড়া হচ্ছে। বছরের বাকি সময়ে আপ স্ট্রিমে পানি যেমন থাকে সেই অনুযায়ী ছাড়া হয় ডাউন স্ট্রিমে। গঙ্গার পানির স্তর বৃদ্ধি হতেই ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।

তারা আরও জানায়, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানির স্তর বাড়ায় সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যে পরিমাণ পানি আসছে সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৭৭.৩৪ ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করেছে।

বিহার, ঝাড়খণ্ডসহ গঙ্গার উচ্চ অববাহিকায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে হু হু করে বাড়ছে গঙ্গার পানির স্তর। ফারাক্কা ব্যারেজের আপ স্টিমে জল ধারণ ক্ষমতা ২৬.২৪ মিটার। বিপদসীমা ২২.২৫ মিটার এবং সর্তকতা সীমা ২১.২৫ মিটার। ইতোমধ্যে আপ স্টিমের ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করায় শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ গেট। ইতোমধ্যেই ১১ লাখ কিউসেকের বেশি পানি ছাড়া হচ্ছে ব্যারেজ থেকে। প্রচুর পানি বইছে বাংলাদেশের দিকে। তবে তাতে কোনও শঙ্কা দেখছেন না বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। 

কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন বন্যাকবলিত জেলাগুলো পূর্বাঞ্চলে। ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো খুলে দেওয়ায় গঙ্গা নদীর পানি বাড়বে। বর্তমানে গঙ্গার পানি বিপদসীমার এক থেকে দেড় মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও সেটি খুব বেশি বাড়বে না। ফলে এখনও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে বন্যার কোনও শঙ্কা দেখছি না।’