Asset value of MPs: ৬১ শতাংশ লোকসভা সাংসদের সম্পত্তির পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকার বেশি

১৮ তম লোকসভার বেশিরভাগ সাংসদ কোটিপতি। লোকসভার ৫৪৩ জন সাংসদের মধ্যে প্রায় ৬১ শতাংশের সম্পত্তির পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা বা তার বেশি। এই সাংসদের মধ্যে প্রায় ৩২ শতাংশ রাজনৈতিক পরিবার থেকে এসেছেন। ৯ শতাংশ, তাঁদের পরিবারে রাজনীতিতে প্রথম পা দিয়েছেন। ৭২.১ শতাংশ দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজনীতিবিদ। আর ৬.৪ শতাংশের পরিবার একাধিক প্রজন্ম ধরে রাজনীতি করছে।

সংসদে তাহলে কাদের প্রবেশ নিশ্চিত

‘সংসদে জায়গা করতে পারেন কারা’- এমন শিরোনাম দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নন-প্রফিট সংস্থা প্রজাতন্ত্র। ১৮ তম লোকসভায় কীভাবে সাংসদ নির্বাচন হয়েছে এবং তাঁরা এ ক্ষেত্রে কতটা বাধার মুখোমুখি হয়েছেন, সবটাই নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। দেখা যাচ্ছে যে যাঁরা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসেননি, সংসদে প্রবেশের জন্য তাঁরা শ্রেষ্ঠ উপায় হিসাবে দলীয় রাজনীতি করেছেন। এইভাবে ১৬.২ শতাংশ নেতা সংসদে জায়গা করে নিতে পেরেছেন। ঠিক তারপরেই রয়েছে স্থানীয় রাজনীতি, ১৪.৪ শতাংশ জায়গা করেছেন। আর ছাত্র রাজনীতি করে মাত্র ৯.২ শতাংশ সংসদে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন।

আরও পড়ুন: (Firhad Hakim: ‘আমার নাতনিটা কী ভাবছে? বড় হয়ে…’ ধর্ষণ নিয়ে উদ্বেগে ফিরহাদ)

নির্বাচনে বিজেপি বনাম কংগ্রেস

বিজেপিতে, বেশিরভাগ সাংসদ, যাঁরা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে নন, সেই ১৬.৮ শতাংশ নেতা মূলত স্থানীয় রাজনীতি থেকে এসেছেন। আর কংগ্রেস পার্টিতে, ১২.১ শতাংশ নেতা দলীয় রাজনীতির মাধ্যমে এসেছেন। ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনে, বিজেপি পারিবারিক সংযোগ সহ ১১০ জন প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছিল, এবং তাঁদের মধ্যে ৬২ জন জয়ী হয়েছিলেন, সাফল্যের হার ছিল প্রায় ৫৬.৩৬ শতাংশ। কংগ্রেস পার্টিতে প্রভাবশালী পরিবারের ৯৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৪৩ জন জয়ী হয়েছিল, সাফল্যের হার ছিল প্রায় ৪৩.৪৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন: (সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করতে প্রেসিডেন্সি জেলে সিবিআই আধিকারিকরা)

মহিলা প্রার্থীদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে মোট ৭৯৭ জন মহিলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৭৪ জন সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এই ৭৪ জন মহিলার মধ্যে বেশিরভাগ জনই প্রভাবশালী পরিবার থেকে এসেছেন, এঁদের মধ্যে কারও কারও স্থানীয় রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল, ৮.১ শতাংশ সেলিব্রিটি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেও ছিলেন। উল্লেখ্য, এই নির্বাচিত মহিলা এমপি-দের দের মধ্যে ৬৩.৫ শতাংশ অত্যন্ত ধনী। তাঁদের কাছেও ৫ কোটি টাকা বা তার বেশি সম্পদ রয়েছে। তাঁদের পাশাপাশি বাকি ১৮.৯ শতাংশ মহিলার বিরুদ্ধে আবার গুরুতর অপরাধমূলক অভিযোগও রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও হাইলাইট করা হয়েছে, যে রাজনীতিবিদরা নিজেই নিজেদের রাজনীতিতে জায়গা করে দিয়েছেন, অর্থাৎ কোনও রাজনৈতিক বংশ থেকে আসেননি, সেই সমস্ত রাজনীতিবিদদের খুব অংশই সংসদে পৌঁছাতে পেরেছেন, কারণ বেশিরভাগই বড় বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: (Unified Pension Scheme: UPS-এর ইউটার মানে কী জানেন? কেন্দ্রের পেনশন স্কিমকে নিয়ে মোদীকে খোঁচা খাড়গের)

প্রতিবেদনে আরও দেখা গিয়েছে যে যদিও বেশ কয়েকজন এমপি স্থানীয় রাজনীতি বা ছাত্র রাজনীতি থেকে এসেছেন। কিন্তু সংসদে সহজে প্রবেশের পথগুলি বেশিরভাগই ধনী ব্যক্তিদের জন্যই খোলা থাকে। এরই পাশাপাশি যে নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা রয়েছে বা যাঁরা অপরাধী ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন, তাঁদের জন্যও এই পথ উন্মুক্ত। 

সবমিলিয়ে, রিপোর্ট এটাই দেখিয়েছে যে এমপি হওয়ার ক্ষেত্রে অর্থের অভাবই সবচেয়ে বড় বাধা, কারণ প্রায় ৬১ শতাংশ এমপি অত্যন্ত ধনী, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি বা তার বেশি টাকা। সংসদে জায়গা করে নেওয়ার ক্ষেত্রে ধনী হওয়ার পাশাপাশি, রাজনীতির দিক থেকে প্রভাবশালী পরিবারের দাপট বিস্তর। প্রায় ৩২ শতাংশ এমপির পরিবার আগাগোড়াই রাজনীতিতে ছিল। বাকি ৩১ শতাংশের বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাই মোটের ওপর ভারতীয় রাজনীতিবিদরা ঠিক কেমন হন, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই রিপোর্ট।