মহিলা কনস্টেবলের হাতে কামড় বসিয়ে দিলেন বিজেপি নেত্রী, তুঙ্গে উঠেছে আলোড়ন

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় নবান্ন অভিযান করে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। কিন্তু তাতে তাণ্ডব দেখা গেলেও অভিযান সফল হয়নি। তখন বিজেপি পাল্টা বাংলা বনধ ডেকে তাদের পাশে দাঁড়াতে চাইল। বন্‌ধ সফল করার নানা চেষ্টা করলেও শেষে ব্যর্থ হয়। হুমকি, আস্ফালন এবং গায়ের জোর দিয়েও সাধারণ মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখতে পারল না বিজেপি। দলের নেতা–কর্মীরা রক্তচক্ষু দেখালেও বেলা গড়াতেই স্বাভাবিক ছন্দেই এগোতে লাগল মানুষজন। তবে ধিক্কার রব উঠেছে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক ফাল্গুনী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। কারণ এক মহিলা পুলিশকে কামড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

এদিকে বুধবার রায়গঞ্জে এক মহিলা কনস্টেবল বন্‌ধ সমর্থকদের রাস্তা থেকে হটাতে গেলে তাঁর হাতেই কামড়ে দেন বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী। বিজেপি নেতা–কর্মীরা জোর করে যান চলাচল স্তব্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যান। বাধা দেন রায়গঞ্জ থানার মহিলা কনস্টেবলরা। তখন রেগে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী চক্রবর্তী কামড় বসিয়ে দেন এক মহিলা কনস্টেবলের হাতে। কারণ ওই মহিলা কনস্টেবল তাঁকে সরাতে গিয়েছিলেন। এই ছিল মহিলা কনস্টেবলের অপরাধ। তখনই বেনজির দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌সবুজ বা লাল রঙের চাদর ছিল না’‌, আরজি কর কাণ্ডের পর্দাফাঁস করলেন ডিসি সেন্ট্রাল

অন্যদিকে এক তরুণী চিকিৎসকের উপর নির্যাতনের সুবিচার চাইতে নেমে আর এক মহিলা কনস্টেবলকে কেমন করে কেউ আক্রমণ করতে পারেন সেটা নিয়েই দিনভর চর্চা হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তাঁর বক্তব্য, ‘‌বিজেপি বিচার চাইতে রাস্তায় নামছে না। বরং চক্রান্ত করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করাই তাদের উদ্দেশ্য। একজন মহিলা নেত্রী আন্দোলনের নামে হিংসাত্মক কার্যকলাপ করছেন। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে না গেলে কেউ এমন করতে পারেন না।’‌ বনধ সফল করার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার। তাঁরা জোর করে যান চলাচল স্তব্ধ করতে যান। তখন তাতে বাধা দেন রায়গঞ্জ থানার মহিলা কনস্টেবল। কামড় দেন ফাল্গুনী।

এছাড়া মহিলা চিকিৎসকের উপর নির্যাতনের সুবিচার চাইতে এমন কাণ্ড করবে বিজেপি নেত্রী তা কেউ কল্পনা করতে পারেননি। যদিও এই বিষয়টি চাউর হতেই ফাল্গুনী দেবীর সাফাই, ‘‌আজকের বন্‌ধে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেন। সেটা দেখেই রায়গঞ্জ থানার পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই আত্মরক্ষার জন্য আবেগের বশে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে। এটার পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।’‌ রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‌তদন্ত চলছে।’‌ আর রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা আখতারের দাবি, বন্‌ধকে কেন্দ্র করে ৩৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আর ইসলামপুরে দু’জনকে আটক করা হয়েছে।’‌