জাতিসংঘের গভীর সমুদ্রবিষয়ক চুক্তিতে অনুসমর্থন উপদেষ্টা পরিষদের

সমুদ্র রক্ষা এবং গভীর সাগরে সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবহার সংক্রান্ত জাতিসংঘের ‘বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অব এরিয়াস বিয়ন্ড ন্যাশনাল জুরিসডিকশন’ (বিবিএনজে) চুক্তিতে অনুসমর্থনের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) উপদেষ্টা  পরিষদের বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর এই চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। চুক্তির মাধ্যমে সবাইকে গভীর সমুদ্রে ভাসমান সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।

জাতিসংঘের এ চুক্তির শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— মেরিন প্রটেকটেড অঞ্চলে সম্পদ আহরণ করা যাবে না, উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে গভীর সমুদ্রে সম্পদ আহরণ করতে পারে, সেজন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে হবে, অতিরিক্ত মাত্রায় মাছ ধরা যাবে না, পরিবেশের ওপর প্রভাব পর্যালোচনা করতে হবে, সমুদ্রদূষণ রোধ করতে হবে এবং গবেষণার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হবে।

গভীর সমুদ্রের সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবস্থাপনায় সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতা বিনির্মাণ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে চুক্তিতে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনও দেশের তটরেখা বা উপকূল থেকে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যে সমুদ্র, সেটির ওপর ওই দেশের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। এরমধ্যে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত পানিতে ভাসমান অর্থাৎ মাছসহ অন্যান্য সম্পদ এবং সমুদ্রের তলদেশে যে সম্পদ রয়েছে, সবকিছুর মালিক ওই দেশ। কিন্তু ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরে শুধু সমুদ্রের তলদেশে যে সম্পদ রয়েছে, সেটির মালিক ওই দেশ। অন্যভাবে বলা যায়, ২০০ নটিক্যাল মাইলের পর সমুদ্রে ভাসমান সম্পদ অন্য যেকোনও দেশ আহরণ করার অধিকার রাখে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০০ নটিক্যাল মাইলের পর ভাসমান সম্পদ, যা ‘মেরিন জেনেটিক রিসোর্সেস’ নামে পরিচিত, অন্য কোনও দেশ বা কোম্পানি তা আহরণ করলে সেটির একটি অংশ ওই অঞ্চলের মালিকানা যে দেশের, তাকে দিতে হবে।

উপদেষ্টা পরিষদ মনে করে, চুক্তিতে অনুসমর্থন করা হলে, বাংলাদেশের পক্ষে এ সংক্রান্ত বিষয়ে ন্যায্য হিস্যা অর্জন করা সম্ভব হবে। এই প্রেক্ষাপটে বৈঠকে চুক্তিটি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।