‘মানুষের মনে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে… নতুন করে আঘাত দেবেন না’, BJPর কর্মসূচির বিরোধিতার কেসে HCর ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য

আরজি কর-এ মহিলা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে বিজেপির ধরনা কর্মসূচির বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্যসরকার। হাইকোর্ট বলছে, ‘সবাই কর্মসূচি করছে। নির্দিষ্ট একটি দলের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম হবে কেন?’

 আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ধর্মতলায় ধরনা অবস্থানের জন্য অনুমতি চেয়ে বিজেপি হাইকোর্টে আবেদন জানায়। সেই মামলায় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গল বেঞ্চ একটি রায় দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় এই ইস্যুতে। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের বিরোধিতার কথা শুনে রাজ্য়ের শাসকদলের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টানে হাইকোর্ট। রাজ্যের আবেদন শুনে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি বলেন,’বুধবার শহরে চারটি বড় কর্মসূচি হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট কর্মসূচি হয়েছে। সেগুলোতে তো আপত্তি আসেনি। একপক্ষ বিচার করলে হবেনা, উভয় পক্ষই কর্মসূচি করছে।’ প্রসঙ্গত, নবান্ন অভিযান ঘিরে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বুধবার ১২ ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দেয় বিজেপি, সেই একই দিনে ছিল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচি। মেয়ো রোডে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, ধর্মতলার ডরিনা ক্রসিং কিম্বা ওয়াই চ্যানেলে ধর্নার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, উপরোক্ত দু’টি জায়গার মধ্যে যে কোনও একটিতে আট দিন ধরে ধরনা দিতে পারবে বিজেপি। রাজ্য এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। ডরিনা ক্রসিংয়ে টানা আট দিন কর্মসূচি চললে যানজটে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে, এমন যুক্তি পেশ করে রাজ্য। রাজ্যের আবেদন ছিল বিজেপির কর্মসূচিকে ওয়াই চ্যানেলে করা হোক আর তা ২ দিন করার অনুমতি দেওয়া হোক। রাজ্যকে হাইকোর্টের পরামর্শ, ‘নিজেরা মিটমাট করে নিন’। সাফ বার্তা,’সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে মামলা করলে, তা খারিজ করে দেব।’

( Green Line Metro on Sunday: এবার রবিবারেও গঙ্গার নিচ দিয়ে ছুটবে মেট্রো! পরিষেবা চালু ক’দিন পরই, জেনে নিন সময়-সূচি)

ভর্ৎসনার সুরে রাজ্যকে কোর্ট বলে, ‘আমরা তো আপনাদের পদ্ধতি সম্পর্কে জানি, যেখানে জন হাতে কাজ হয়না বাঁ হাত ব্যবহার করেন, বিশদে বললে লজ্জায় পড়তে হবে।’ আরজি করের প্রসঙ্গ নিয়ে রাজ্যের ভূমিকাতেও বিরক্তি প্রকাশ করে হাইকোর্ট। সরকার পক্ষের আইনজীবীকে কোর্ট বলে, একটা ঘটনায় মানুষের গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে, ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা করুন,  নতুন করে আঘাত দেবেন না, যাতে তা আরও বেড়ে যায়।