Child murder: ‘দেবীর স্বপ্নাদেশ’ পেয়ে শিশুর আঙুল কেটে উৎসর্গ-খুন, যাবজ্জীবন সাজা ঠাকুমা-কাকিমার

প্রথমে তিন বছরের শিশু কন্যার আঙুল কেটে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। পরে ফুটফুটে সেই শিশু কন্যার মুখে প্লাস্টিক জড়িয়ে খুন করেছিল নিজের ঠাকুমা এবং কাকিমা। ৯ বছর আগে নিউটাউন থানা এলাকার সেই ঘটনায় এতদিন মামলা চলছিল আদালতে। অবশেষে সেই মামলায় সাজা ঘোষণা করল বারাসত জেলা আদালত। নৃশংসভাবে শিশু কন্যাকে খুনের দায়ে ঠাকুমা এবং কাকিমার সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত।

আরও পড়ুন: সমপ্রেমী সম্পর্কের আরও রহস্য ভেদ পুলিশের, শিশুর খুনি কে জানা গেল না এখনও!

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে। ঠাকুমার নাম আরতি নস্কর এবং কাকিমার নাম কবিতা নস্কর। জানা যায়, দেবী নাকি তাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তাদের বংশের কারও রক্ত দিলে তিনি সন্তুষ্ট হবেন। তাতে পরিবারের সকলের উন্নতি হবে। সেই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরে তিন বছরের ফুটফুটে ওই শিশু কন্যাকে দেবীর ঘরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তার হাতের একটি আঙুল কেটে উৎসর্গ করেছিল দুজনে। কিন্তু, তাতে যন্ত্রণা ছটফট করতে থাকে শিশুটি। চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করলেন দুজনে মিলে শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করে করতে একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট মুখে জড়িয়ে ধরে।

খুনের পর তারা দেহ লোপাটের পরিকল্পনাও করে। এর জন্য চালের বস্তায় মৃতদেহ ভরে চিলেকোঠায় রেখে দিয়েছিল। এদিকে, শিশুর বাবা-মা কোনওভাবে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে নিউটাউন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। যদিও শিশুর বাবার ধারণা ছিল তাদের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু, তদন্তে নেমে পুলিশ আরতির একটি শাড়িতে রক্তের দাগ দেখতে পায়। এর পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি খুনের ঘটনা। পরে মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি ওই দুজনকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে। জেরে দুজনেই খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। 

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই নাকি তারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছিল। তখন থেকে জেলে ছিল দুই অভিযুক্ত। তারা জামিন পায়নি। জেল হেফাজতে রেখেই চলছিল বিচার। অবশেষে আদালত ঠাকুমা ও কাকিমার সাজা ঘোষণা করল। উল্লেখ্য, ঠাকুমা ও কাকিমার ধর্মীয় গোঁড়ামির মাশুল দিতে হয়েছিল তিন বছরের ওই শিশুকন্যাকে।  ৯ বছর পর দোষীরা শাস্তি পাওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি।