শেখ হাসিনা-জয়-পুতুলসহ ৪২৫ জনের নামে মামলা, আদালতে হট্টগোল

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট থেকে একের পর এক মামলা হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এবার তার নামে মামলা হয়েছে চট্টগামে। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ ৪২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিনের আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী মামুন আলী।

মামলার বাদীর বক্তব্য গ্রহণের পর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিলে শুরু হয় হট্টগোল। একপর্যায়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায় চলে যান। পরে সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার আদেশ দেন।

মামলার আসামি তালিকায় আরও রয়েছেন- সাবেক সেতু ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, নগর গোয়েন্দা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত, নগরের হালিশহর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব কুমার চৌধুরী, আওয়ামী লীগের নেতা এরশাদুল আমীন, হালিশহর থানার তৎকালীন এসআই জামাল উদ্দিন, মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট নগরের হালিশহর এলাকায় বাদীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান করছিলেন। ওই সময় হালিশহর থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। সেখানে উপস্থিত থাকা বিএনপির ১৭ জন কর্মীসহ বাদীকে ধরে থানায় নিয়ে যান। থানায় ওসির নেতৃত্বে বাদীকে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে বাদীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। বাদীকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয় তার বাবার কাছে। বাদীর বাবা ওসির দেখানো দুজন লোককে সাত লাখ টাকা চাঁদা দেন।

এ ছাড়া ঘটনার দিন ওসি প্রণব চৌধুরী তার মুঠোফোনে আসামি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে ভিডিও কল দিয়ে বাদীকে নির্যাতনের চিত্র দেখান। পরে বাদী জামিনে বেরিয়ে এলে কয়েক দফায় তাকে থানায় ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

এদিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, চট্টগ্রাম আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিনের আদালতে দুপুর ১২টার দিকে মামলার আবেদন করেন বাদী মামুন আলী। প্রায় ১০ মিনিট শুনানি শেষে বিচারক আদেশ দেন পিবিআইকে তদন্তের জন্য। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করেন। ওই সময় তারা বলতে থাকেন পিবিআইকে তদন্ত নয়, সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার আদেশ দিতে হবে। একপর্যায়ে বিব্রত হয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায় চলে যান।