একসঙ্গে ৯৩ চিকিৎসককে শোকজ নোটিশ, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদক্ষেপে জোর চর্চা

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগে এখন প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সব রাজনৈতিক দলই পথে নেমেছে। ফাঁসির দাবি, বিচার চাই এবং উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান শোনা যাচ্ছে সকলের মুখে। এবার একসঙ্গে ৯৩ জন চিকিৎসককে শোকজ করল স্বাস্থ্য দফতর। ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ভাঙার অভিযোগ তুলে ৯৩ জন চিকিৎসককে শোকজের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন। বিরোধীদের দাবি, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় রাস্তায় নামার জন্যই শোকজ করা হয়েছে। শাসকপক্ষের দাবি, কোন আইনে কী আছে সেটা চিকিৎসকরা ভালই জানেন। নিয়ম ভাঙলে কেন তা ভাঙা হচ্ছে সেটা জানতে চাওয়া স্বাভাবিক।

গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার জেরে গোটা রাজ্যে তুমুল বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে। গর্জে ওঠে চিকিৎসক মহল। অপরাধীর শাস্তির দাবিতে রাজপথে মিছিল নামে। এবার তমলুকের চিকিৎসকদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ গিয়েছে। আর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্টকে না মেনে কেউ ১৫টি, কেউ ১৬টি, আবার কেউ ২৯টি নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত আছেন। স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালেই সেই তথ্য উঠে এসেছে। তাতেই সংশ্লিষ্টদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এই অনিয়ম চলছে। চিকিৎসকদের পাশাপাশি জেলার প্রায় ৭০টি নার্সিংহোমকেও নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়তেই এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ অর্থ দফতরের সচিবকে সেচ দফতরে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব পদে কি বদল হবে?

এবার অনিয়ম সামনে আসতেই তাতে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদেরকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‌ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ও রুল রয়েছে। সেটা মানতেই হবে সকলকে। হাসপাতাল থেকে নার্সিংহোম সবাই এটা মেনে চলে। এক একজন ডাক্তার দুইয়ের বেশি জায়গায় জড়িয়ে। আমরা নার্সিংহোমগুলিকে বলেছি ডাক্তারদের থেকে খবর নিন। আমাদের জানান, কেমন করে একসঙ্গে দু’জায়গায় যুক্ত আছেন। কোন সময় কোথায় থাকেন?‌ জানাতে হবে। ৯৩ জন ডাক্তারকে তার জন্য দিই চিঠি। এটার সঙ্গে আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক নেই।’‌

এছাড়া আজ, শুক্রবার এই ঘটনা সামনে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে আইএমএ তমলুক শাখার সম্পাদক কল্যাণময় বসুর বক্তব্য, ‘‌আইএমএ থেকে আমরা জানতে পেরেছি একসঙ্গে ৯৩ জন চিকিৎসককে নোটিশ ধরানো হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের আন্দোলনে সকলেই যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কেন নোটিশ পাঠিয়েছে?‌ সেটাই খতিয়ে দেখা হবে। এই আন্দোলনে তো সবস্তরের মানুষ যোগ দিয়েছেন। সিএমওএইচ কেন নোটিশ দিলেন? সেটা‌ যাচাই করে দেখব।’‌