কর্মবিরতি নয়, রোগীর প্রেসক্রিপশনে আরজি করের জন্য ‘বিচার চাই’ দাবি তুললেন চিকিৎসক!

দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল প্রায় ২০ দিন। সারা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পথে নেমেছে আর জি কর ঘটনায় নির্যাতিতার দোষীদের ফাঁসি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে কলকাতার বুকে, তা মেনে নিতে এখনও পারছেন না কলকাতাবাসী।

যে চিকিৎসকের মূল শপথ মুমূর্ষ রোগীদের সেবা করা, সেই চিকিৎসকের এই করুন পরিণতি, তাও আবার কর্ম ক্ষেত্রে, এই ঘটনা সত্যিই মানুষের মনকে নাড়া দিয়েছে। আর জি কর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পথে নেমেছেন চিকিৎসকরাও।

দোষীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আর জি কর সহ অন্যান্য হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের চিকিৎসকরা কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছেন। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্ম ক্ষেত্রে ফিরে যাবেন না তাঁরা, এ কথাও বার বার জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমনকি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ সত্বেও চিকিৎসকরা কাজে ফিরে যান নি।

(আরও পড়ুন: অদিতি থেকে ইশা, একাধিক তারকা নজর কেড়েছেন বাঁধনী পোশাকে, হঠাৎ এই প্রিন্ট এত ট্রেন্ডি হয়ে উঠল কেন?)

তবে যেখানে কলকাতার চিকিৎসকরা কর্ম বিরতিতে পথে নেমেছেন, সেখানে নিজের ব্রত থেকে এক চুল সরে যাননি রায়গঞ্জের উকিল পাড়ার চিকিৎসক দেবব্রত রায়। কর্ম বিরতির পথে না গিয়ে রোগীদের সেবা করার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। তবে কর্ম বিরতি না নিলেও তিনি একটি অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন চিকিৎসক মৃত্যুর প্রতিবাদ জানানোর জন্য।

রোগী দেখার পর রায়গঞ্জের দেবব্রত রায় যখন রোগীদের প্রেসক্রিপশন লিখে দেন, সেই প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে অবাক হয়ে যান রোগীরা। রোগীরা দেখেন, ওষুধের পাশাপাশি প্রেসক্রিপশনে রয়েছে একটি স্ট্যাম্প যাতে লেখা রয়েছে, ‘আর জি কর বিচার চাই, অপরাধী চক্রের বিনাশ চাই।’

এই প্রসঙ্গে ডাক্তার বাবুর বক্তব্য, রোগীরা যারা আমাদের কাছে আসেন, তাঁরা আমাদের ভীষণ আপনজন। তাঁদের কাছেও আমরা তেমনি আপন। রোগীদের ফিরিয়ে না দিয়ে এই নীরব প্রতিবাদের মাধ্যমে এই প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা করছি আমরা। কর্ম বিরতিতে না গিয়ে এই স্ট্যাম্পের মাধ্যমে সকলের মধ্যে প্রতিবাদের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।

(আরও পড়ুন: পুজোয় ভ্যাপসা গরমেও মেকাপ টিকিয়ে রাখতে চান? মাথায় রাখুন এই টিপসগুলি)

প্রসঙ্গত, দেবব্রত রায়ের এই প্রেসক্রিপশন এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে। সকলেই দেবব্রত বাবুর এই অভিনব উদ্যোগকে সম্মান জানিয়েছেন। রোগীদের ফিরিয়ে না দিয়ে যেভাবে তিনি কাজের মাধ্যমে নিজের প্রতিবাদের ভাষা সকলের সামনে তুলে ধরেছেন, তা সত্যি প্রশংসনীয়।

দেবব্রত রায়ের মতো রায়গঞ্জের আরও কয়েকজন চিকিৎসক একই ভাবে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মর্মান্তিক ঘটনার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও তদন্ত সেই ভাবে এগোয়নি। তাই এইভাবেই নীরব প্রতিবাদ জানানোর পথ বেছে নিয়েছেন রায়গঞ্জের চিকিৎসক মহল।